চর্মরোগের লক্ষণ - চর্মরোগ সারানোর উপায় সম্পর্কে জেনে নিন

প্রিয় পাঠক বন্ধুগণ আজ আমি আপনাদের মাঝে চর্মরোগের লক্ষণ এবং চর্মরোগ সারানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে সাহায্য করবো। আমরা সবাই কমবেশি চর্ম রোগেরসাথে পরিচিত। কিন্তু অনেক সময় মানবদেহে চর্ম রোগের দেখা দিলে কেউ কেউ তার সঠিক অনুমান করতে পারে না। এবং এ কারণে অনেক সময় মানুষ ঘাবড়ে যায়।

চর্মরোগের লক্ষণ - চর্মরোগ সারানোর উপায় সম্পর্কে জেনে নিন

তাই আজ আমি আপনাদেরকে চর্ম রোগের লক্ষণ সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিয়ে সাহায্য করবো এবং কিভাবে এই চর্ম রোগ হতে মুক্তি পাওয়া যায়। তার সকল দিক নিয়ে আজ আপনাদের মাঝে বিস্তারিত জানাবো। চলুন যে দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক চর্ম রোগের কি কি লক্ষণ দেখা যায়।

পোস্ট সূচিপত্রঃ চর্মরোগের লক্ষণ - চর্মরোগ সারানোর উপায় সম্পর্কে জেনে নিন

চর্ম রোগের লক্ষণ

আমরা সকলেই জানি যে চর্ম রোগের প্রকোপ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ত্বক দেহের গুরুত্বপূর্ণ অংশ কারণ ত্বকের নিচে অবস্থিত সম্পূর্ণ দেহের এবং ত্বকের বাইরে অবস্থিত যত কিছু আছে তার সকল কিছুকে রক্ষা করে আমাদের দেহের ত্বক। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক চর্ম রোগের লক্ষণগুলো কেমন হয়।

চর্মরোগ বিভিন্ন কারণে হতে পারে, অনেক সময় বিভিন্ন প্রকার খাদ্য ও ওষুধ সেবনের ফলেও চর্ম রোগ হতে পারে। এছাড়াও জন্মগতভাবেও কিছু চর্মরোগ রয়েছে। চর্ম রোগ দেখতে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে, আর তাই এক একটি চর্মরোগ দেখতে এক এক রকম হয়ে থাকে অনেক সময় বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকার কারণে এই চর্মরোগকে চিনতে অসুবিধা হয়ে যায়।

আরো পড়ুনঃ ১৬ ডিসেম্বর কি দিবস - ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস

চর্ম রোগের লক্ষণ সমূহ গুলো হলঃ চর্মরোগ শরীরের যেকোনো স্থানে হতে পারে এবং ত্বকের ওপরে  রঙের পরিবর্তন দেখা দেয় যেমন বেশি কালো বা বেশি সাদা হয়ে যায়। এছাড়াও ত্বকের কিছু কিছু স্থানে কোন দানা, ফুসকুড়ি ওঠা, ত্বকের চুলকানি, ব্যথা বা জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে। এছাড়াও বেশ কিছু চর্ম রোগের লক্ষণ দেখা যায়। যেমন-ত্বক বেশি শক্ত অথবা পাতলা হয়ে যায়। ত্বকের চুল পড়ে যায় ইত্যাদি। ডাক্তারি মতে এ পর্যন্ত প্রায় দুই হাজারের বেশি চর্মরোগ আবিষ্কার হয়েছে এবং দিনে দিনে এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেহেতু চর্ম রোগের বিভিন্ন প্রকার তাই এর লক্ষণও ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।

চর্ম রোগ সারানোর উপায়

জন্মগতভাবে যদি কোন মানুষের চর্মরোগ হয় তাহলে সেটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রতিরোধ করার সম্ভব হয়ে ওঠে না। আর তাই প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ করা সবচেয়ে ভালো কাজ তাই আমাদের সকলের উচিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। চর্মরোগ সারানোর উপায় সম্পর্কে জানার আগ্রহটা সবার বেশি থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক চর্মরোগ সারানোর উপায় সমূহ গুলো কি কি।

১. প্রতিনিয়ত সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে। নিজের খাবারের পাত্র অন্য কারো সাথে শেয়ার করা যাবে না। যেমন প্লেট গ্লাস চায়ের কাপ পানি খাওয়ার পাত্র ইত্যাদি।

২. প্রতিদিন কমপক্ষে সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন, অতিরিক্ত শারীরিক ও মানসিক চাপ থেকে বিরত থাকতে হবে, পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে পাশাপাশি ৬ থেকে ৮ লিটার পানি পান করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ সুদ কি - সুদের ভয়াবহতা - সুদ হারাম হওয়ার কারণ জেনে নিন ২০২৩

৩. নিয়মিত গোসল করতে হবে, কারণ অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ময়লা যে কোন চর্ম রোগের প্রধান কারণ। আর তাই প্রতিদিন নিয়মিত গোসল করতে হবে গোসলের ফলে আপনার শরীরের সমস্ত ময়লা জীবাণু দূর হয়ে যায়। যদি সম্ভব হয় তাহলে কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করাই ভালো এতে করে সকল প্রকার ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়।

৪. ব্রণ প্রতিরোধ করতে হবে, কিন্তু কিভাবে করতে হবে সেটা আমরা অনেকেই জানিনা। তাই সকলের ব্রণ প্রতিরোধের প্রতিকার সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। আপনার ত্বক যদি ব্রোন প্রবণ হয়ে থাকে তাহলে প্রতিদিন আপনি নিয়মিত দুই থেকে তিনবার কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার অভ্যাস করতে পারেন। এবং মুখ পরিষ্কার করার পরে, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত ফ্রেশওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন।

৫. এনজাইম এর মত চর্মরোগ প্রতিরোধ করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। একই সাথে সুগন্ধী যুক্ত লোশন বা ক্রিম ব্যবহার পরিহার করতে হবে। প্রতিনিয়ত ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।

৬. ত্বক সুস্থ রাখার জন্য ধূমপন অ্যালকোহল পরিহার করতে হবে।

৭. চর্ম রোগ থেকে মুক্তির জন্য অ্যালোভেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কারণ ত্বকের যে কোন সমস্যার জন্য অ্যালোভেরার রস লাগানোর ফলে সহজেই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

৮. অনেক সময় ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, যার ফলে চর্ম ও রোগের লক্ষণ দেখা যায় কিন্তু অলিভ অয়েল প্রতিনিয়ত শরীরে মাখলে ত্বক ভালো থাকে এবং ভিটামিনের কারণে ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে।

৯. চর্ম রোগের আরো একটি মহা ঔষধ হল, তুলসী পাতা, তুলসী পাতাতে রয়েছে হাজারো গুণ। শরীরে নানা ধরনের ক্ষত, লাল ছোপ, পোড়া, চুলকানি সহ ত্বকের যেকোনো সমস্যাই তুলসী পাতা বেটে রস লাগালে সঙ্গে সঙ্গে কার্যকারী উপকার পাওয়া সম্ভব।

১০. এছাড়াও রয়েছে নিম পাতা, নেমে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা যেকোনো জ্বালাময়ী ভাব কমিয়ে দিতে পারে, এছাড়াও বিশেষ করে চুলকানি বা ত্বকের লাল সোপ ইত্যাদি কমাতে নিম পাতা বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

চর্ম রোগের ঔষধের নাম

আপনারা সকলেই চর্ম রোগের ঔষধের এর নাম জানতে জানতে চান। কিন্তু অনেকেই জানে না চর্ম রোগের ওষুধের নাম এবং তাই চর্মরোগের ঔষধের নাম জানতে বেশি আগ্রহ দেখায়। তাহলে চলুন দেরি না করে আমরা জেনে নিই চর্ম রোগের ওষুধের নাম গুলো।

১. বায়োপ্লাজেন ২০

২. লেজার থেরাপি

৩. আন্টিহিস্টামিন

৪. স্টরয়েড  যুক্ত ক্রিম বা মলম

৫. অ্যান্টিবায়োটিক এছাড়াও ডাক্তারের পরামর্শ মত প্রেসক্রিপশন যুক্ত ঔষধ সেবন করা উচিত।

তাহলে আমরা খুব সহজেই জানতে পারলাম যে কিভাবে চর্ম রোগের সঠিক চিকিৎসা পাওয়া সম্ভব। এবার জানব চর্ম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা কিভাবে করা হয়।

চর্ম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

চর্মরোগকে সাধারণ সমস্যা হিসেবে দেখলে পরবর্তীতে জটিল সমস্যায় ভুগতে হয়। এর কারণ হলো চর্মরোগ থেকে পরবর্তী সময়ে বড় কোন রোগের সৃষ্টি হতে পারে। যেমন দাদ, মেস্তা, ব্রণ, এলার্জি, ঘা-পাঁচড়া ইত্যাদি এই চর্ম রোগের বড় অংশ। অনেক সময় দেখা যায় রক্ত দূষিত হলে ত্বকে নানা সমস্যার  সৃষ্টি হয়। তাই আজকে আমি আপনাদেরকে চর্ম রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার কিছু ঘরোয়া নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে আর দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক চর্ম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা কি?

আরো পড়ুনঃ ধাতু রোগ সারানোর উপায় - ধাতু রোগ কেন হয়

১. প্রতিদিন গোসলের সময় পানির সাথে নিম পাতা গরম করে সেই পানি দিয়ে গোসল করে চর্ম রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

২. প্রতিদিন সকাল বেলা খালি পেটে নিম পাতা বেটে নিম পাতার রস খেলে চর্মরোগ সেরে যায়।

৩. চিচিঙ্গা-যে চর্মরোগ পুরনো হয়ে যায় কিছুতেই কিছু হয় না সে ক্ষেত্রে চিচিঙ্গার ডাটা ও পাতা একসঙ্গে রস করে ছেকার পরে সেই রস সমপরিমাণ পানি মিশিয়ে একটু গরম করে দুই থেকে তিন চামচ নিয়ে সকালে দিকে একবার খেতে হবে।

৪. মুলার পাতা রস করে তোকে লাগালে যে কোন ধরনের চর্ম রোগ খুব শীঘ্রই ভালো হয়ে যায়।

৫. এছাড়াও তে রয়েছে ক্লোরিন এবং সোডিয়ামের মত উপাদান, এই দুটি উপাদানই পাকস্থলীতে মল স্থির হতে দেয় না এবং এ কারণে বদ হজম বা গ্যাস হয় না। তাই প্রতি দিন মুলা খেলে মুখের দাগ ফুসকুড়ি বা ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাহলে আমরা খুব সহজেই জানতে পারলাম যে কিভাবে চর্ম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা করা যায়।

সর্বশেষ কথা এমন নতুন নতুন পোস্ট করতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কারণ আমরা প্রতিদিন নতুন নতুন পোস্ট ওয়েবসাইটে আপলোড করে থাকে। তাই নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url