গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা - গর্ভবতী মায়ের নয় মাসের খাবার তালিকা ২০২৩

প্রিয় পাঠক আমরা অনেকেই অনেক সময় দুশ্চিন্তায় থাকি। কারণ একজন মা যখন গর্ভবতী হয় তখন সে মায়ের কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয় আর তার মধ্যে অন্যতম হলো গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা। যখন একজন গর্ভবতী হন তখন তার খাবারের কিছু পরিবর্তন আনতে হয়, গর্ভবতী মা ও শিশু যেন সুস্থ থাকে। তাই আজকে আপনাদের সকল দুশ্চিন্তা দূর করে দিয়ে গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা সম্পর্কে জানাবো।

গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা - গর্ভবতী মায়ের  নয় মাসের খাবার তালিকা ২০২৩

অনেকে আছেন যারা গর্ভবতী হওয়ার পরে বিভিন্ন রকম দুশ্চিন্তায় ভোগে যে কোন খাবার খেলে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কোন খাবার পরিহার করতে হবে এর সকল বিষয় সম্পর্কে জানেন না। আর তাই সেই সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আর দেরি না করে চলুনজেনে নেওয়া যাক গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা সমূহ।

পোস্টসূচিপত্রঃ গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা - গর্ভবতী মায়ের  নয় মাসের খাবার তালিকা ২০২৩

গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার খাওয়া মা ও সন্তানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এবং গর্ভাবস্থায় এমন খাবার খেতে হবে যে খাবারে যথেষ্ট পরিমাণে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম থাকে সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এছাড়াও প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় দুগ্ধজাত খাবার থাকা আবশ্যক। গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা গুলো হল

গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ডাল, সয়াবিন, বাদাম জাতীয় খাদ্যদ্রব্য থাকা প্রয়োজন। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ডিম থাকা অত্যাবশকীয়। কারণ ডিমে প্রায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি থাকে একটি ডিমে প্রায় ৮০ % ক্যালোরি এবং প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন,ফ্যাট, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে। তাই একজন গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় এই খাবারগুলো থাকা প্রয়োজন।

আরো পড়ুনঃ হস্ত মৈথুন থেকে বাচার উপায় - হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর দিক সমাধান ২০২৩

এছাড়াও গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি থাকা প্রয়োজন কারণ সবুজ শাকসবজিতে রয়েছে ফাইবার, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও পটাশিয়াম এর মত উপাদান। চর্বিহীন মাংস শরীরের জন্য রেড মিটে আয়রনের পরিমাণ বাড়ায় এবং রক্ত গারো করতে সাহায্য করে। গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকার পাশাপাশি ব্যায়াম এবং বিশ্রামের জন্য সঠিক নির্দেশনার সম্পর্কে জানতে হবে কারণ গর্ভাবস্থায় নিয়ম অনুযায়ী ব্যায়াম করলে শরীর এবং মন দুটোই ভালো থাকে।

গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা হিসেবে আরো যোগ করা যেতে পারে, যেমন দেশি মুরগি ও ডিম। কারণ ডিমের রয়েছে ভিটামিন এ ভিটামিন বি ভিটামিন ডি, ই, কে এছাড়াও ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও জিংক রয়েছে। হাঁস মুরগি প্রোটিনের চমৎকার উৎস। এর পাশাপাশি ভিটামিন বি, জিংক ও আয়রন রয়েছে। আর তাই প্রথম মাসের গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকায় ডিম ও মুরগি অবশ্যই রাখা উচিত।

গর্ভবতী মায়ের প্রথম এক মাসের খাবার তালিকা

এই পৃথিবীতে প্রতিটা সন্তানের জন্য মা হলো তার জীবনে বটবৃক্ষের ছায়ার মত। মায়ের অফুরন্ত স্নেহ ভালবাসায় সন্তানরা নিরাপদ ও নীরভাবও নাই বেড়ে উঠতে পারে। আর তাই গর্ভবতী হওয়া মায়ের জন্য কিছু দিকনির্দেশনা থাকে। গর্ভবতী মায়ের প্রথম এক মাসের খাদ্য তালিকায় হিসেবে যা থাকা প্রয়োজন সেগুলো নিম্নরূপ দেওয়া হলোঃ

আরো পড়ুনঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

১. গর্ভবতী মায়ের প্রথম এক মাসের খাদ্য তালিকা হিসেবে দুগ্ধ জাত খাবার থাকা প্রয়োজন। এছাড়া ফলেস্ট সমৃদ্ধ খাবার, হাঁস-মুরগি ও ডিম, ছোট মাছ, প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি, বাদাম ও লাউয়ের বীজ, কড লিভার অয়েল, আয়োডিনযুক্ত লবণ।

গর্ভবতী মায়ের প্রথম দুই মাসের খাবার তালিকা

১. ফলিক এসিড

২. আয়রন জাতীয় খাবার

৩. ক্যালসিয়াম

৪. ভিটামিন

৫. প্রোটিন

৬. জিঙ্ক

৭. চর্বি

গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকা

গর্ভকালীন প্রথম তিন মাস একজন নারীর অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সময়। এর সময় প্রসূতি নারীর খাবারে অরুচি বমি বমি ভাব অনেক ক্ষেত্রে ওজন কমে যাওয়া ও রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। তাই আজকে আমরা জানবো গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকা কি।

১. ভিটামিন বি

২. ভিটামিন বি-৬ সমৃদ্ধ খাবার

৩. ফোলেট সমৃদ্ধ খাবার

৪. টাটকা ফল

৫. শাকসবজি

৬. কার্বোহাইড্রেট

৭. এছাড়াও ভিটামিন ডি

গর্ভবতী মায়ের প্রথম পাঁচ মাসের খাবার তালিকা

গর্ভবতী মায়ের পাঁচ মাসের সময় থেকে ভ্রনের যথাযথ বৃদ্ধির জন্য মায়ের সুষম খাবার নিশ্চিত করা জরুরী। আর তাই গর্ভবতী মায়ের প্রথম পাঁচ মাসের খাবার তালিকা হিসাবে কিছু নিম্নরূপ দেওয়া হল

১. প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার

২. আমিষ জাতীয় খাদ্য

৩. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি

৪. ক্যালসিয়াম

৫. ফাইবার

৬. এবং পাকা ফল

গর্ভবতী মায়ের  নয় মাসের খাবার তালিকা

একজন সুস্থ মা পারে কেবল একজন সুস্থ শিশুর জন্ম দিতে। আর তাই সুস্থ শিশু জন্ম দেওয়ার আগে নিশ্চিত করতে হবে সুস্থ মা হওয়া। তাই গর্ভাবস্থায়ী পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ মা ও সন্তান উভয়ের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গর্ভবতী মায়ের নয় মাসের খাবার তালিকা হিসেবে দিনে তিনবার মূল খাবারের পাশাপাশি দুইবার নাস্তা গ্রহণ করা উচিত। স্বাভাবিকের তুলনায় এই সময় দিনে 350 থেকে 450 ক্যালোরি বেশি খেলে শরীরের জন্য যথেষ্ট। আর এই খাদ্য গুলোর মধ্যে খাবারগুলো হতে হবে অবশ্যই সুষম খাদ্য। গর্ভবতী মায়ের নয় মাসের খাবার তালিকা নিম্নে বর্ণনা করা হলো।

১. শর্করা জাতীয় খাবার

২. আমিষ

৩. চর্বি

৪. ভিটামিন

৫. মিনারেল

৬. ও পানি জাতীয় খাদ্য

৭. আইরন সমৃদ্ধ খাবার

৮. ফলিক এসিড যুক্ত খাবার

৯. সমৃদ্ধ খাবার

উপরোক্ত খাবার খাওয়ার মাধ্যমে একজন গর্ভবতী মায়ের সুস্বাস্থ্য লক্ষ্য করা যায় এবং সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়া সম্ভব। তাহলে এ থেকে বোঝা যাই যে গর্ভবতী হওয়ার পরে মায়েদের উচিত সন্তানের সুস্বাস্থ্য কামনার জন্য সুষম খাদ্য খাওয়া এবং শরীরকে সুস্থ রাখা।

গর্ভবতী মায়ের ফলের তালিকা

গর্ভাবস্থায় একজন নারীর জীবনে সবচাইতে অন্যতম সেরা সময়। এই সময় মা ও অনাগত শিশু উভয়েই অনেক যত্নের প্রয়োজন হয়। একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য তালিকা বজায় রাখলে সেটা যেমন বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় তেমনি মা ও শিশুর স্বাস্থ্য ভালো থাকে। আর তাই গর্ভবতী মায়ের ফলের তালিকা হিসাবে কিছু নাম দেওয়া হল যা মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অধিক উপকারী।

তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভবতী মায়ের ফলের তালিকা সমূহ কি

পেয়ারা

দেশি পেয়ারা অধিক পুষ্টিকর এবং এই ফল সারা বছরে পাওয়া যায়। এটা গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ফল। এবং এই ফল অন্য ফলের চাইতে দাম কম তাই কেউ চাইলে খুব সহজেই এই ফল কিনতে পারে।

তরমুজ

তরমুজ একজন গর্ভবতী নারীর জন্য উপকারী ফল। কারণ এই ফল গর্ভবতী মায়ের পানি স্বল্পতা দূর করে এবং শিশুর পানির অভাব পূরণ করে। তাই এই ফল হতে পারে গর্ভবতী নারীর জন্য উপকারী ফল।

কলা

গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন একটি করে কলা খাওয়ার অভ্যাস করুন। কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। ইলেকট্রোলাইটসের ভারসাম্য ঠিক রাখে কলা। যার ফলে স্নায়ু মাংসপেশীর কজকর্ম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে সফল হয়।

কমলা

কমলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং ফলিক এসিড। গর্ভাবস্থায় ভ্রুনের মস্তিষ্ক আর মেরুদন্ড গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে কমলা।

আপেল

আপেল গর্ভাবস্থায় আপনি যদি প্রতিদিন অন্তত একটি করে আপেল খাওয়ার অভ্যাস করেন তাহলে বাচ্চার  এলার্জি ও অ্যাজমা হওয়ার শঙ্কা কমে যাবে। আপেলেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আইরন যা গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিনের সংকট সামাল দিয়ে অ্যানিমিয়া রোধ করে।

গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

গর্ভাবস্থা একজন নারী জীবনে অন্যতম সেরা সময় বলা হয়। এই সময় যা ইচ্ছা তাই খেতে পারেন এই স্বাধীনতা জীবনের অন্য কোন পর্যায়ে  বিশেষ পাওয়া যায় না। তবে তার মধ্যেও কিছু খাবারের বিধি-নিষেধ মেনে চলা উচিত। তাহলে মা ও শিশু দুজনেই ভালো থাকে। গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকার মধ্যে রয়েছে, কাঁচা অথবা আধা পাকা পেঁপে। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য কাঁচা বাধা পাকা পেঁপে খাওয়া বিপদজনক এতে গর্ভপাতের মত ঘটনা ঘটতে পারে। এবং প্রেগনেন্সি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

আরো পড়ুনঃ চর্মরোগের লক্ষণ - চর্মরোগ সারানোর উপায় সম্পর্কে জেনে নিন

গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা এর মধ্যে রয়েছে ক্যাফেইন চা কফিতে ক্যাফেইন থাকে। দৈনিক ২০০ গ্রামের বেশি ক্যাফেইন গহন করা ঠিক নয়। আর এই অতিরিক্ত ক্যাফেইনের কারণে শিশুর ওজন কমে যায়। না ধোয়া শাকসবজি গর্ভধারণের পর খাওয়া উচিত নয়, সারা বিশ্বে প্রায় ৭৮ পার্সেন্ট মানুষ না ধোয়া ফল বা শাকসবজি খেয়ে থাকে। আর এই না ধোয়া ফল বা শাকসবজিগুলির খোসা গুলিতে শুধু ক্ষতিকারক কীটনাশক থাকে না, এতে আরো বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবাণু থাকে। তাই উচিত হবে ভালোভাবে পরিষ্কার করে খাওয়া।

নাইট্রেট সমৃদ্ধ খাদ্য, অত্যাধিক চিনি সমৃদ্ধ খাদ্য, রাস্তার খাবার, যুক্ত খাবার, এবং অত্যধিক কৃত্রিম মিষ্টি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। অত্যাধিক নাইটের সমৃদ্ধ খাবার ফলে তাদের শরীরে সেফ লাইন বাড়িয়ে দেয় এবং এটি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অনেক সময় স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় আইসক্রিম অনেকবার খেয়ে থাকেন বা খেতে চান তবে এগুলোতে থাকা উচ্চ চিনির মাত্রা যা আপনার রক্তে মিশে চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং ভ্রণকে ক্ষতি করতে পারে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিনি এড়িয়ে চলতে হবে। তবে সব সময় না খেয়ে মাঝে মাঝে খেলে কোন ক্ষতি হবে না।

এছাড়া আনারস, কাঁচা পেঁপে, আঙ্গুর ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো যদিও বৈজ্ঞানিক সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাহলে খুব সহজেই আমরা জানতে পারলাম যে গর্ভাবস্থায় কোন কোন খাবার থেকে বিরত থাকা উচিত এবং গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা। আর এই নিয়মগুলো মেনে চললে একজন গর্ভবতী মায়ের সুস্বাস্থ্য এবং পেটের সন্তান ভালো থাকবে এবং সুস্থ সন্তান জন্ম লাভ করবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url