রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

  

মানুষ কিভাবে নিজের শরীরকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় জানবে তা। এবং নিজের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-পতঙ্গ এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। সে বিষয়ে চিন্তা করে। আর সেই জন্য ভাবে যে কোন কোন খাবারে বেশি পুষ্টি থাকে, এবং কোন খাবার খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে,
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

আজ আমি আপনাদের মাঝে জানাবো যে কোন কোন খাবার খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এবং শরীর সুস্থ রাখে। তার বিস্তারিত আলোচনা করব। জেনে নিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সমূহ।

পোস্ট সূচিপত্রঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়

প্রতিটা মানুষ সুস্বাস্থ্য কামনা করে। মানুষ চাই কিভাবে সুস্থ থাকা যায়। শরীর সুস্থ থাকলে সকল কাজকর্মে মন বসে। আর তাই, শরীর সুস্থ রাখার জন্য বিভিন্ন খাবার খেতে হয়। আজ জানবো, কোন কোন খাবার খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যেমনঃ দুগ্ধ জাত খাবার খেতে হবে যথাঃ দই, ঘোল, ঘি, ছানা। দুগ্ধ জাত খাবার খাওয়ার ফলে শরীরের পাকস্থলীতে বিভিন্ন প্রকার উপকারী জীবাণু থাকে। আর এই দুগ্ধজাত খাবার ফলে শরীরে উপকারী জীবাণু সজীব হয়। আর যদি পাকস্থলীর উপকারী জীবাণু না থাকে তাহলে শরীরের ক্যান্সার দেখা দেয়।

আরো পড়ুনঃ সেরা ১২ টি উইন্ডোজ ১১ সেটিংস পরিবর্তন করুন

অতিরিক্ত ভাত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ একজন মানুষের প্রতিদিন ৬০% কার্বোহাইড্রেট বা শরকরা প্রয়োজন। তাই এর বেশি অতিরিক্ত ভাত খাওয়া উচিত না, যদিও আমাদের দেশের মানুষ ভাত বেশি খেয়ে থাকেন কিন্তু তার তুলনায় প্রোটিনের সংখ্যা কমে যায়। যার জন্য প্রয়োজনের অধিক ভাত না খাওয়াই ভালো।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য, একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন 6 থেকে 8 ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, তেল চর্বি বেশি মসলাযুক্ত খাবারের পরিবর্তে শাক-সবজি ফলমূল বেশি পরিমাণে খেতে হবে। চা কফি বেশি খাওয়া যাবেনা। চায়ে চিনি কম খেতে হবে। এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি, কারণ উচ্চ রক্তচাপ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করে।

শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়

বড়দের মতো ছোটদেরও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। কারণ বড়দের চেয়ে ছোটদের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। আর তাই ছোট শিশুদের জন্য পাঁচটি খাবারের নাম বলবো যা শিশুদের জন্য খুবই উপকারী।

সবুজ শাকসবজি: ছোট শিশুদের জন্য প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় সবুজ শাক-সবজি থাকা প্রয়োজন। কারণ সবুজ শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন যার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সবুজ শাকসবজি খাওয়ার কারণে শরীর সর্বদা সুস্থ থাকে।

ফলমূল: ছোট শিশুদের শরীরের জন্য ফলমূল খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ফলমূলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও ভিটামিন এ, ফলের মধ্যে রয়েছে যেমন আমলকি, বাতাবি লেবু, পেঁপে, পেয়ারা, কমলালেবু, আপেল, আঙ্গুর, ডালিম সহ অন্যান্য ফল।

দই: শিশুদের দই খাওয়ার ফলে তাদের মেধা বিকাশিত হয়। এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন খাবারের পাশাপাশি খাদ্য তালিকায় শিশুদের দই খাওয়াতে হবে। দই খাওয়ার ফলে শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে ফেলে।

ডিম: শিশুদের ভাতের সাথে সিদ্ধ ডিম মাখিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে। এতে শিশুদের শরীরে পুষ্টি বৃদ্ধি হয়। এছাড়াও সকালে নাস্তার সাথে ডিম অভ্যাস করুন। ডিমে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, প্রোটিন ও ভিটামিন রয়েছে।

প্রোটিন: প্রোটিন জাতীয় খাবারের মাধ্যমে শিশুদের শরীরের গঠনের নানা চাহিদা পূরণ হয়। আর এই জন্য শিশুকে প্রতিদিন প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করতে হবে। যেমনঃ মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, ইত্যাদি।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কাকে বলে

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে জানতে হলে আগে জানতে হবে রোগ প্রতিরোধ কি? রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হলো এমন একটি উপাদান যা একটি মানুষের শরীরের উন্নত বিকাশ ঠিক করে। শরীরে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে যা ধ্বংস করে। এটি দেহের বিভিন্ন অঙ্গ পতঙ্গ ঠিক রাখে এবং ক্যান্সারের মতো রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়। আর তাই একজন মানুষের জন্য তার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকা আবশ্যক

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় কেন

শরীরে বিভিন্ন কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। হতে পারে সেটা পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হওয়া। সঠিক পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার না খাওয়া। ধূমপান করা, এছাড়াও শরীরে জিংকের ঘাটতি হলে রক্তের শ্বেত কণিকা কমে যায়, যার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যভাস, এবং একাকীত্ব বা নিঃসঙ্গতার কারণেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যেসব খাবার খাওয়া প্রয়োজন তাহলে। সঠিক পরিমাণে পানি পান করা। প্রতিদিন এর খাদ্য তালিকায় সবুজ শাকসবজি থাকা প্রয়োজন। সবুজ শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

আরো পড়ুনঃ কিভাবে আপনার Chrome book এ ভাষা পরিবর্তন করবেন

দুগ্ধজাত খাবারের মাধ্যমে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। দুধ খাবারের মাধ্যমে শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়া গুলো সতেজ থাকে এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শর্করা, আমিষ, স্নেহ, প্রোটিন, জাতীয় খাবার থাকা আবশ্যক।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে কোন ভিটামিন

প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যেইসব ভিটামিন শরীরের জন্য উপকারী তা হল ভিটামিন এ, এটিতে রয়েছে বিটাক্যারোটিন যা ত্বককে সতেজ রাখে ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এবং ভিটামিন এ এর ফলে রাতকানা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন সি খুবই উপকারী।

ভিটামিন সি এর মাধ্যমে শরীরের নানাভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। যেমনঃ ত্বক সুস্থ রাখে, দাঁতের ক্ষয় রোধ দূর করে, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়, উচ্চ রক্তচাপ কমায়, দাঁতের গোড়া মজবুত করে। 

আমরা সবাই জানি, যে প্রায় সকল টক জাতীয় ফল গুলোতে ভিটামিন সি রয়েছে যেমনঃ তেতুল, কমলালেবু, লেবু, আনারস, আমলকি, পেপে, কলা ইত্যাদি।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির দোয়া

মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়, আর এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পবিত্র কোরআনে বিভিন্ন দোয়া দিয়েছে যা আমল করলে আল্লাহতালা সকল রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে। তবে কেউ যদি আল্লাহ তায়ালার বিধি-বিধান মেনে জীবন যাপন করে তাহলে আল্লাহতালা তাদের দোয়া বেশি কবুল করে থাকেন।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, যারা প্রতিদিন আল-কদর এর ৩ সময়ে ৪১ বার পড়বে, তার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেবেন। তাই প্রতিদিন নিয়মিত এই আমলগুলো করতে হবে। এ আমলের ফলে শরীর সুস্থ থাকবে, সকল প্রকার জটিল ও কঠিন রোগের হাত থেকে মুক্তি পাবে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যায়াম

শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য অন্যতম মাধ্যম হলো ব্যায়াম। ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখা সম্ভব, কেননা শরীর সুস্থ না থাকলে কোন কাজ করতে মন বসে না। আর তাই শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিনিয়ত ব্যায়ামের বিকল্প নেই।

প্রতিদিন ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যেমনঃ প্রতিদিন দৌড়ানোর মাধ্যমে শরীরকে ফিট রাখা সম্ভব। এতে করে পায়ের বিভিন্ন হাড় মজবুত ও সতেজ থাকে, রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। বিভিন্নভাবে ব্যায়ামের অনুশীলন করা যায়।

আরো পড়ুনঃ উন্নত জাতের মরিচ চাষ পদ্ধতি - কাঁচা মরিচের ‍উপকারিতা

যেমনঃ সাঁতার কাটার মাধ্যমে ব্যায়ামের অনুশীলন করা যায়, সাইকেল চালিয়েও ব্যায়াম করা যায়, দৌড়ানোর মাধ্যমে ব্যয়ামের অনুশীলন করা হয়ে থাকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে১৮-৬৪ বছর বয়স্ক মানুষের উচিত প্রতিনিয়ত অ্যারোকিব ব্যায়াম করা। এতে শরীরের নানা অঙ্গ পতঙ্গ সতেজ থাকে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

রোগ প্রতিরোধের জন্য কোন অভ্যাস ভালো

আমরা জানি সবাই চাই সুস্থভাবে জীবন যাপন করতে, কিন্তু কিভাবে সুস্থ থাকা যায় সেই সম্পর্কে আজ আপনাদের বিস্তারিত জানাবো। সুস্থ থাকতে হলে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে, এতে করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন অভ্যাস করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

  • প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে
  • ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে
  • প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন এতে করে শরীর ও মস্তিষ্ক সতেজ থাকে
  • নিয়মিত ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে যেমনঃ কলা, পেঁপে, আনারস, লেবু, কমলা,
  • দুগ্ধ জাতীয় খাবার খেতে হবে
  • মানসিক চাপ কমাতে হবে
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
  • প্রতিদিন শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে
  • এবং নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে

উপরোক্ত অভ্যাস গুলো করার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, এবং শরীর সুস্থ থাকবে। তাই প্রতিদিন নিয়মিত উপরোক্ত অভ্যাসগুলো পালন করব। তাহলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে ও জটিল ও কঠিন রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url