কিসমিসের উপকারিতা - কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ২০২৩

প্রিয় পাঠকগণ, আজকে আমি আপনাদের মাঝে নতুন এক স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে কিসমিসের উপকারিতা এবং কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো। আমরা অনেকেই কিসমিস খেতে পছন্দ করি কিন্তু এর মধ্যে অনেকেই আছে যারা কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে জানিনা। আর তাই আপনাদের কথা চিন্তা করে কিসমিস এর উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো।

কিসমিসের উপকারিতা - কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ২০২৩

কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমে আমাদের যেটা জানতে হবে তা হল কিসমিস কখন এবং কিভাবে খেতে হয় চলুন দেরি না করে জেনে নেই কিসমিস কখন খেতে হবে এবং কিসমিসের উপকারিতা কি।

পোস্ট সূচিপত্রঃ কিসমিসের উপকারিতা - কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ২০২৩

কিসমিসের উপকারিতা

আমরা অনেকেই মনে করে থাকি, কিসমিস আলাদা একটি ফল কিন্তু কিসমিস আলাদা কোন ফল নয়। কিসমিস মূলত শুকনো আঙ্গুর যা প্রচুর পরিমানে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এ ছাড়া অন্যান্য খাদ্য তালিকাগত ফাইবার গুলির মত বিভিন্ন উপাদানে ভরপুর। যারা সুস্বাস্থ্য ও সুস্থ থাকার কথা চিন্তা করেন তাদের উচিত নিয়মিত কিসমিস খাওয়া। প্রাকৃতিকভাবে কিসমিস মিষ্টি হয় এবং কিসমিস ক্যালোরিতে পরিপূর্ণ। আর তাই নিয়মিত কিসমিস খেলে স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় এবং সুস্বাস্থ্য অর্জন করা সম্ভব।

আরো পড়ুনঃ খুশকি কেন হয় - চুল পড়া ও খুশকি দূর করার উপায়

কিসমিস আপনার শরীরে খাদ্য হজমে সাহায্য করে। এছাড়াও আপনার শরীরে আয়রনের মাত্রা বাড়িয়ে হাড় মজবুত রাখতে পারে। সাধারণত আমরা কিসমিস ব্যবহার করে থাকি মিষ্টি জাতীয় খাবারে যেমনঃ সেমাই, পায়েশ, ফিরনি জর্দা ইত্যাদি। চলুন দেরি না করে কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিই

১. ওজন বাড়াতে কিসমিস কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

২. রক্তশূন্যতা দূর করে। রক্তশূন্যতার অন্যতম কারণ হলো শরীরে আয়রনের অভাব। আর এজন্য এই সমস্যায় শরীরে পর্যাপ্ত লোহিত রক্তকণিকা তৈরি হয় না যা শরীরে অক্সিজেন সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায়। আর তাই শরীরে আইরনের অভাব পূরণ করতে নিয়মিত কিসমিস খেলে রক্তশূন্যতা দূর হয়ে যায়।

৩. কিসমিস মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে কিসমিস। অনেকেই মনে করেন যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা কিসমিস খেতে পারবে না কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন যে সীমিত পরিমানে ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তি খেয়ে থাকে তাহলে তার শরীরে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করে।

৫. কিসমিস খাওয়ার ফলে যৌন স্বাস্থ্যের সাথে যুক্ত হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে।

৬. জ্বর ভালো হওয়ার জন্য কিসমিসের কদর রয়েছে। শরীরের যেকোনো ধরনের ইনফেকশন হলেই জ্বর হতে পারে সেটি আমরা সকলেই জানি। যখন শরীরে জ্বর হয় তখন শরীরে নানা রকম ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস বাসা বাঁধে। আর এমন পরিস্থিতে কিসমিস সেই ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস দূর করতে সাহায্য করে। কিসমিসের এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা এই ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে।

৭. ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। কিসমিসে থাকা উপাদান ক্যান্সারের মতো মরণ রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। NCBI-এর একটি গবেষণা অনুসারে কিসমিসে থাকা মিথানল নির্যাসে অ্যান্টি রেডিক্যাল এবং ক্যান্সার প্রতিরোধক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধের সহায়ক হিসেবে কাজ করে।

৮. কিসমিস খাওয়ার ফলে আপনার ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে

৯. কিসমিস আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে

১০. কষ্টকাঠিন্য দূর করে

কিসমিস খাওয়ার নিয়ম

আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি যে কিসমিস কে শুকনো ফলের সারিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় যা আঙ্গুর ফলকে শুকিয়ে প্রস্তুত করার মাধ্যমে কিসমিস তৈরি করা হয়। আর তাই কিসমিসকে প্রায় তিন সপ্তাহ রোদে শুকিয়ে আদ্রতা বের করা হয়ে থাকে। আর তাই কিসমিসের উপকারিতা অনেক। আমরা এখন জানবো কিসমিস খাওয়ার নিয়ম-

কিসমিসের উপকারিতা - কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ২০২৩

আপনি যদি কিসমিসের সম্পূর্ণ উপকারিতা পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। আর তাই আপনাকে জানতে হবে কোন কোন রোগের জন্য কিসমিস খাওয়া উচিত। এবার আমরা কিসমিস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানব এবং কিভাবে কিসমিস খেতে হয়। আপনি চাইলে কিসমিস পিনাট বাটার বা ফ্র্রুট সালাতের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। নাস্তার সাথেও খাওয়া যেতে পারে।

আরো পড়ুনঃ আম খাওয়ার উপকারিতা - আম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

এছাড়া সকালে হালকা কিছু খাওয়ার পরে খেতে পারবেন। আপনি চাইলে কিসমিস সরাসরিও খেতে পারেন। আপনি প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ গ্রাম কিসমিস খেতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যারা ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তি তাদের জন্য পরিমাপ অনুসারে হতে হবে। তবে সবচেয়ে উত্তম হলো সকালবেলা খাওয়া। আপনি যদি কিসমিস রাতে ঘুমানোর আগে পানিতে ভিজিয়ে রাখেন এবং পরের দিন সকালে সেটা খান তাহলে এতে অনেক বেশি উপকার পাবেন। এর কারণ হলো ভেজানো কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, এবং ফাইবার থাকে।

যৌন ক্ষমতা বাড়াতে কিসমিসের উপকারিতা

কিসমিস আমাদের দেশে অতি পরিচিত এবং চিরচেনা একটি নাম। এবং কিসমিসের ব্যবহার সর্ব জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে। এটি যেমন আমাদের মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে তেমনি কিসমিসের উপকারিতা রয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা এবং কিসমিস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা যৌন ক্ষমতা বাড়াতে কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

কিসমিসের উপকারিতা - কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ২০২৩

দুর্বলতা বা জন অক্ষমতা দূর করতে সাহায্য করে। আর তাই আপনি যদি নিয়মিত কিসমিস খান তাহলে আপনার শরীর হয়ে যাবে। আমাদের শরীরে খাবার হজম হওয়া অবশ্যই জরুরি। আর তাই খাবার হজম করতে কিসমিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর এজন্য খাবার ঠিকমতো হজম হলে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আপনি চাইলে নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন তাহলে আপনার যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং ভালো উপকার পাবেন।

আরো পড়ুনঃ কাঁচা পেঁপে খাওয়ার নিয়ম - পাকা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা ২০২৩

কিসমিস রক্ত সঠিকভাবে চলাচল করতে সাহায্য করে। আর যখন রক্ত চলাচল ব্যালেন্স থাকে তখন যৌন সমস্যা দূর হয়। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে-নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার ফলে শরীরে সেক্স পাওয়ার বাড়াতে সাহায্য করে। আপনি উদাহরণস্বরূপ নিয়মিত কিসমিস খেয়ে দেখতে পারেন। কিসমিসে থাকা আরজিনিন নামের একটি অ্যামাইনো এসিড রয়েছে যা লিঙ্গ শিথিলতা বা ইরেক্টাইল ডিসফাংসনে দারুণ কাজ করে। এছাড়াও শরীরের শুক্রানুর সচলতা বাড়িয়ে গর্ভধারণের সম্ভাবনা বাড়ায় আরজিনিন।

বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মানুষ নানারকম সমস্যায় ভুগতে থাকে। কিন্তু যারা যৌন সমস্যায় ভোগেন তারা লজ্জার খাতীরে কারো সামনে মুখ খুলতে চাই না। আর এই জন্য ঘরোয়া ভাবে কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে যৌন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যারা যৌন ক্ষমতায় অক্ষম তাদের জন্য কিসমিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিসমিস খেলে আপনার শরীর এবং মন দুটোই ভালো থাকে। আর এ সময় আপনি যৌন মিলনে লিপ্ত হলে পরিপূর্ণ তৃপ্তি পাওয়া সম্ভব।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

আপনি যদি রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রেখে দেন, এবং পরের দিন সকালবেলা সেই পানিসহ কিসমিস খান তাহলে আপনার শরীরে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করবে। আর ইতিমধ্যে আপনারা জানতে পেরেছেন যে ভেজানো কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, এবং ফাইবার। আর তাই যাদের শরীরে হাই ব্লাড প্রেসার উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কিসমিস ভেজা পানির ভূমিকা অপরিসীম। তাহলে আমরা কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা জানতে পারলাম।

আরো পড়ুনঃ খুশকি কেন হয় - চুল পড়া ও খুশকি দূর করার উপায়

তবে আমরা অনেকেই ভেজানো কিসমিসের চাইতে শুকনো কিসমিস খেতে বেশি পছন্দ করি। কিন্তু শুকনো কিসমিসের চাইতে পানিতে ভিজিয়ে রাখা কিসমিস খাওয়া বেশি উপকারী। এছাড়া কিসমিসের পানি খেলে পেটের কষ্টকাঠিন্য এসিডিটি এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যা থেকে ওষুধ ছাড়াই সহজেই ঘরোয়া ভাবে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

সকালে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

কিসমিস কমবেশি সকলেরই প্রিয় একটি খাবার। আর এটি শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কিসমিসে রয়েছে পটাশিয়াম, যা আপনার হার্ট ভালো রাখে এবং খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর তাই কিসমিস খাওয়ার নানা উপকার রয়েছে। আর তাই সকালে উপকারিতা এখন জানব।

কিসমিসের উপকারিতা - কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ২০২৩

আপনি যদি প্রতি রাতে দুই কাপ পানিতে একটু কিসমিস ভিজিয়ে রেখে দেন এবং পরের দিন সকালে ওই কিসমিস ভেজানো পানি থেকে নিয়ে একটু হালকা গরম করে খেয়ে নিন তাহলে শরীরের জন্য খুবই ভালো হবে। এছাড়াও সকালে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা অনেক রয়েছে। যেমনঃ ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে, শরীরের রক্ত স্বল্পতা কমিয়ে দেয়, হজম শক্তি বাড়ায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও কিসমিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। শরীরের রোগ মুক্ত করে। কিসমিস ‍হৃদক্রিয়া ভালো রাখে।

কিসমিস এর অপকারিতা

কিসমিস যে শুধু স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় তা কিন্তু নয়। অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে উপকারের চেয়ে ক্ষতি হতে পারে। তাই কিসমিস এর উপকারিতা যেমন রয়েছে ঠিক তেমনি কিসমিস এর অপকারিতা ও রয়েছে। আর তাই চলুন কিসমিস এর অপকারিতা সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিই।

১. যাদের শরীরে ডায়াবেটিস রয়েছে তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কিসমিস খেতে হবে। তা না হলে ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।

২. এছাড়া যাদের শরীরে এলার্জি রয়েছে তাদের কিসমিস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ কিসমিস খাওয়ার ফলে শরীরে এলার্জি হতে পারে।

৩. কিসমিস খাওয়ার ফলে শরীরে ওজন বৃদ্ধি পায় আর তাই শরীরে ওজন ঠিক রাখতে অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৪. অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার পরে শরীরে বদহজম দেখা দিতে পারে তাই অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া পরিহার করতে হবে।

সর্বশেষ কথা কিসমিস বিষয়ে সকল কিছু আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম পোস্টটি ভাল লেগে থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটির নিয়মিত ভিজিট করবেন এবং আমাদের সাথেই থাকবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url