গরমে ঘামাচি হওয়ার কারণ ও নিরাময়ের ১৬ টি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

অনেকেই আছেন, যাদের শরীরে গরমের সময় অসহনীয়ভাবে ঘামাচি বের হতে দেখা যায়। আর তাই গরমে ঘামাচি হওয়ার কারণ ও নিরময়ের ১৬ টি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানব। প্রথমে আমাদের জানা উচিত ঘামাচি কি? ঘামাচি মূলত এক ধরনের চর্মরোগ। আর এই জন্য গরমে ঘামাচি হওয়ার কারণ ও নিরাময়ের ১৬ টি ঘরোয়া উপায় নিয়ে আলোচনা করব।

গরমে ঘামাচি হওয়ার কারণ ও নিরাময়ের ১৬ টি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

অনেকেই আছে যারা ভাবেন? যে গরমে ঘামাচি কেন হয়ে থাকে এবং কোন কারণে হয়ে থাকে। কিন্তু এর সঠিক কারণ অনেকেই জানেনা আর তাই আপনাদের কথা চিন্তা করে আজকে আমি গরমে ঘামাচি হওয়ার কারণ ও নিরময়ের ১৬ টি ঘরোয়া উপায় নিয়ে আলোচনা করব তাই দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক গরমে ঘামাচি হওয়ার কারণ ও নিরাময়ের ১৬ টি ঘরোয়া উপায় কি?

পোস্ট সূচিপত্রঃ গরমে ঘামাচি হওয়ার কারণ ও নিরাময়ের ১৬ টি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

ঘামাচি কি

এই পোস্টটি শুরু করার আগে, আমাদের অবশ্যই জানতে হবে ঘামাচি কি? এবং কেন মানুষের শরীরে বিরাজ করে। ঘামাচি হলো এক ধরনের চর্ম রোগ। আর এই ঘামাচির নামকরণ করা হয়েছে ঘাম শব্দ থেকে। তার কারণ হলো গরমের সময় আমাদের ত্বকে লালবর্ণ ধারণ করে ফুসকুড়ির ন্যায় যা প্রকাশ পায় সেটি হল ঘামাচি বা হিট র‍্যাশ আর এটি সাধারণত শরীরে অত্যাধিক ঘামের প্রভাবে হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ কাঁচা পেঁপে খাওয়ার নিয়ম - পাকা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা ২০২৩

তখন ঘামাচির আক্রমণ ভেবে থাকি। অনেকের মাথায় প্রশ্ন আসে গরমে ঘামাচি কেন হয়? আর এই প্রশ্নের উত্তর হল আমাদের ত্বকের ঘর্মগ্রন্থীর সাথে এক ধরনের জীবাণু মিশে থাকে। আর এই জীবাণু গরমের সময় স্বাভাবিকভাবে ঘর্মগ্রন্থী থেকে ঘাম বেশি বের হয়। আর তাই এই ঘামে ধুলাবালি ও বেশি পরিমাণে জমতে থাকে। আর এই ত্বকের মৃত কোষে ধুলাবালি জমে যখন ঘর্মগ্রন্থী থেকে স্বাভাবিকভাবে ঘাম নিঃসরণ হতে পারে না তখন সেটা স্টেফ এপিডারমাইডিস এর সংস্পর্শে এসে ঘামাচির সৃষ্টি হয়। তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম ঘামাচি কি।

ঘামাচির প্রকারভেদ

ঘামাচির কিছু আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে আর তাই সেই বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ঘামাচির প্রকারভেদ করা হয়েছে। আর সেই প্রকারভেদ গুলো নিম্নোক্ত দেখানো হলোঃ

১. মিলিয়ারিয়া ক্রিস্টালিনা- মিলিয়ারিয়া ক্রিস্টালিনা এই ধরনের ঘামাচি প্রায় স্বাভাবিক ভাবে হয়ে থাকে। আর এর তেমন কোন উপসর্গ দেখা দেয় না। আর তাই এটি ত্বকের এপিডারমিস থেকে হয়ে থাকে

আরো পড়ুনঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

২. মিলিয়ারিয়া প্রফান্ডা- এটিও এক ধরনের ঘামাচি আর এটি মিলিয়ারিয়া ঘামাচির মতই। এবং এটিরও তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না। মিলিয়ারিয়া প্রফান্ডা ত্বকের এপিডারমিস থেকে হয়ে থাকে।

৩. মিলিয়ারিয়া রুব্রা- মিলিয়ারিয়া রুব্রা ও হলেই মূলত আমরা ঘামাচির যন্ত্রণা ভোগ করে থাকি। আর যখন অতিরিক্ত ধুলো ময়লা জমে ঘর্মগ্রন্থি বন্ধ হয়ে ঘর্মনালী ও আবদ্ধ হয়ে যায়। আর যখন ঘামাচিকে মিলিয়ারিয়া রুবার হিসেবে গ্রহণ করা হয়। আর তখন তোকে লাল লাল ফুসকরি বা পানি ফোটা থাকলে তাহলে বুঝতে হবে তা মিলিয়ারিয়া রুবার মতোই ঘামাচি। ঘামাচিতে আক্রান্তের স্থান ও ক্ষতির প্রকৃতি সাধারণত বুকে পিঠে ফুসকুড়ি দেখা দিলেই আমরা এটাকে ভেবে নিই ঘামাচি হয়েছে। কিন্তু বুকে পিঠে ছাড়াও শরীরের যেসব অংশে ভাজ করে যেমনঃ কনুই, ঘাড়,কাঁধ, কুঁচকি ইত্যাদি অংশেও ঘামাচি হয়ে থাকে।

এতক্ষন আমরা ঘামাচি কি ঘামাচির প্রকারভেদ সম্পর্কে জানলাম। এখন আমরা গরমে ঘামাচি হওয়ার কারণ ও নিরাময়ের ১৬ টি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানব। চলুন দেরি না করে এখনি জেনে নিই।

গরমে ঘামাচি হওয়ার কারণ ও নিরাময়ের ১৬ টি ঘরোয়া উপায়

১. বরফঃ গরমে ঘামাচির মোকাবেলা করার জন্য সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো বরফ। আপনি যদি গরমে ঘামাচির মোকাবেলা করতে চান তাহলে যেই সব স্থানে বরফের ঘষা দিলে বরফ পানি কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

২. মুলতানি মাটিঃ মুলতানি মাটির পেস্ট ঘামাচিতে কার্যকরী ভূমিকা হিসেবে দেখা যায়। আর এই পেস্ট তৈরি করতে প্রথমে লাগবে ৪/৬ টেবিল চা চামচ মুলতানি মাটি, গোলাপ জল ৩/৪ টেবিল চা চামচ, এবং পরিমাণ মতো পানি দিতে হবে। এরপরে সমস্ত কিছুকে একসাথে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে ঘামাচির জায়গায় দুই থেকে তিন ঘন্টা রেখে দিতে হবে এবং পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এর কিছুদিন পরে ঘামাচি ভালো হতে শুরু করবে।

৩. বেকিং সোডাঃ আপনারা হয়তো ভাবছেন বেকিং সোডা কিভাবে ঘামাচিতে ব্যবহার করবেন? প্রথমে আপনাকে এক কাপ ঠান্ডা পানিতে এক টেবিল চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিতে হবে। এর পরে একটি কাপড় পরিষ্কার করে বেকিং সোডার পানিতে ভিজিয়ে তা ভালো করে নিংড়ে ঘামাচির স্থানে লাগালে বেশ কার্যকরী উপকার পাওয়া সম্ভব।

৪. নিমপাতাঃ গরমে ঘামাচির মোকাবেলার জন্য নিমপাতা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে

৫. লেবুর রসঃ লেবুর রস ঘামাচি দূর করতে সাহায্য করে কারণ লেবুর রসের রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এর মত উপাদান। ঘামাচি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য একজন মানুষের দিনে তিন চার গ্লাস লেবুর রস মিশ্রিত পানি পান করা অবশ্যই প্রয়োজন। ইতিমধ্যে আমরা গরমে ঘামাচি হওয়ার কারণ ও নিরাময়ের ১৬ টি ঘরোয়া উপায় এর পাঁচটি সম্পর্কে জানতে পেরেছি, পরবর্তী পয়েন্টগুলোর নিচে দেওয়া হল।

আরো পড়ুনঃ তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা - তরমুজ খাওয়ার অপকারিতা ২০২৩

৬. এলোভেরা জেল

৭. চন্দন বাটা বা চন্দন গুড়া ঘরোয়া উপায়ে ঘামাচি দূর করা সম্ভব।

৮. ফিটকিরির পানিঃ আপনি যদি আপনার শরীরে ঘামাচিতে ফিটকিরি মিশ্রিত পানি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রেখে এরপর গোসল করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

৯. আপনার শরীরে ঘামাচি দূর করতে লাউ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি আগুনে ঝোলসে নিয়ে তা থেকে রস বের করে কিছুদিন খেতে পারেন তাহলে ঘামাচির জন্য খুবই উপকারী হবে।

১০. বেসন

১১. আলুঃ গরমে ঘামাচি দূর করার জন্য কাঁচা আলু ব্যবহার করা যেতে পারে।

১২. ওটমিল বাথঃ ওটমিলের ভে যেন পানি ঘামাচির ওপর লাগালে অসহ্যকর চুলকানি থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।

১৩. তরমুজ ঘামাচি দূর করার জন্য বা ঘামাচি থেকে শান্তি পেতে তরমুজ খেতে হবে। একই সাথে তরমুজের পাল্প ঘামাচিতে লাগালে খুবই উপকার পাওয়া যায়।

১৪. আদাঃ গরমে ঘামাচি মোকাবেলার জন্য আদা বা আদার পানি বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে

১৫. শসাঃ শসা শুধু দেহকে হাইড্রেটেডই করেই না, শসা ঘামাচিতেও বেশ আরামদায়ক। হা মাসির চুলকানি দূর করতে শসা বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

১৬. কাঁচা আমঃ কাঁচা আম গরমে ঘামাচি মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর এই জন্য ঘামাচি নিরাময়ে সবচেয়ে ভালো পানীয় হলো কাঁচা আম। এই পানীয় তৈরি করতে আপনার প্রয়োজন দুইটি কাঁচা আম, পরিমাণ মত পানি, লবণ এবং চিনি। প্রথমে আপনাকে দুটি আম গরম পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে এবং তা থেকে রস বের করে ঠান্ডা পানি দিয়ে পরিমাণ মতো লবণ ও চিনি মিশিয়ে তৈরি করতে হবে সুস্বাদু পানীয়। পানি প্রতিদিন দুই একবার করে এক সপ্তাহ পর্যন্ত পান করলে ঘামাচির জ্বালা ও চুলকানি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

প্রিয় সুধী, এতক্ষণ আমরা গরমে ঘামাচি হওয়ার কারণ ও নিরাময়ের ১৬ টি ঘরোয়া উপায় এবং ঘামাচি কি ঘামাচির প্রকারভেদ সে সকল বিষয় নিয়ে সঠিক তথ্য উপাত্ত দিয়ে আপনাদের পাশে থাকার চেষ্টা করলাম। এবং আমাদের এই পোস্টটি এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ। এমন নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url