যাকাত ফরজ হওয়ার সময় ও নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

  

মহান আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের জন্য যেমন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন ঠিক তেমনি যাকাত ফরজ হওয়ার সময় ও নিয়ম নির্ধারণ করেছেন। আর তাই আল্লাহ তায়ালা বলেন হে মুমিনগণ তোমরা তোমাদের বৈধ উপার্জন করো এবং ভূমি থেকে যে শস্য উৎপাদন কর তা আল্লাহর নির্দেশিত পথে সঠিকভাবে ব্যয় কর। আজকে যাকাত ফরজ হওয়ার সময় ও নিয়ম সম্পর্কে জানব।

যাকাত ফরজ হওয়ার সময় ও নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

আমরা জানি ইসলামের পাঁচটি ভিত্তি রয়েছে তার মধ্যে যাকাত একটি। এজন্য যাকাত ফরজ হওয়ার সময় ও নিয়ম সম্পর্কে সকল মুসলমানদের অবগত থাকা প্রয়োজন। ইসলামে যাকাতের গুরুত্ব অপরিসীম। যাকাত দিলে সম্পদ বৃদ্ধি ও পবিত্রতা অর্জন করে। তাহলে আর দেরি না করে চলুন যাকাত ফরজ হওয়ার সময়ের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।

পোস্ট সূচীপত্রঃ যাকাত ফরজ হওয়ার সময় ও নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

যাকাত ফরজ হওয়ার শর্ত

আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের ইবাদতের জন্য নামাজ যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি আর্থিক এবাদতের জন্য যাকাত প্রদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের মূল স্তম্ভের পাঁচটি বিষয়ের একটি হল যাকাত যার স্থান তৃতীয়। যাকাত মানুষের মনে খোদাভীতি সৃষ্টি করে অপচয় রোধ করতে শেখায়। ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকর রা. যাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। যাকাত হল আর্থিক ইবাদত। সুতরাং যাকাত আদায় করা একজন মুমিনের ঈমানী দায়িত্ব। যাকাত ফরজ হওয়ার শর্ত সম্পর্কে এখন আমরা জানব- যাকাত ফরজ হওয়ার কয়েকটি শর্ত রয়েছে কেউ চাইলে নিজের ইচ্ছাকৃতভাবে যাকাত দিতে পারবে না যাকাত ফরজ হওয়ার কয়েকটি শর্ত হলোঃ

১. পরিপূর্ণ সম্পদের মালিক হওয়া

২. মুসলমান হওয়া কোনো অমুসলিমের যাকাত হবে না

৩. বালিগ হওয়া অথবা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া। এক্ষেত্রে ছোট কিংবা নাবালকের ওপর যাকাত ফরজ নয়

৪. অবশ্যই ঋণ মুক্ত থাকতে হবে

৫. হারাম সম্পদের যাকাত হবে না

৬. যাকাত দেওয়ার জন্য সম্পদের পরিপূর্ণ মালিকানা থাকতে হবে

আরো পড়ুনঃ ফিতরা কি - সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা কি ওয়াজিব ২০২৩

৭. বিবেক ও বুদ্ধি সম্পন্ন হতে হবে এক্ষেত্রে যে সর্বদা পাগল থাকে এবং তার নিসাব পরিমান সম্পদ রয়েছে তাহলে তার ওপর যাকাত ফরজ হবে না

৮. দাস দাসীর ওপর যাকাত ফরজ নয়

৯. যাকাত দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই নিজেকে স্বাধীন ব্যাক্তি রাখা

যাকাতের খাত কয়টি

মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে যাকাতের প্রধানত আটটি খাত সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। যাকাত সবার জন্য যেমন ফরজ নয় ঠিক তেমনি যাকাত দেওয়ার ক্ষেত্রেও সবাইকে দেওয়ার বিধানও নেই। যাকাতের খাত কয়টি?  এ সম্পর্কে আল্লাহতালা প্রধানত আটটি খাতের কথা উল্লেখ করেছেন তা হলো

১. ফকিরকে যাকাত দেওয়া

২. মিসকিন

৩. যাকাত আদায়কারী ও যাকাত হেফাজতকারী

৪. দাস মুক্তির কাজে

৫. ঋণ গ্রস্থের জন্য

৬. আল্লাহর পথে কোন অমুসলিমকে আকৃষ্ট করার জন্য

৭. আল্লাহর পথে দ্বীনী কাজে

৮. মুসাফিরের জন্য

কোন কোন সম্পদের উপর যাকাত ফরজ

ইসলামী অর্থব্যবস্থার উৎসাহ গুলোর মধ্যে যাকাত হল অন্যতম। মহান আল্লাহতালা পবিত্র কোরআন মাজীদে ৮২ স্থানে নামাজের সাথে সাথে যাকাতের কথা উল্লেখ করেছেন। আর এই যাকাত আদায়ের মাধ্যমে সম্পদ পবিত্র হয়। তাই আমাদের উচিত যাকাত প্রদান করা তাহলে এটি যেমন সম্পদের পবিত্রতা অর্জন করে ঠিক তেমনি রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের নানা উপকার হয়।

যাকাত প্রদানের মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভিত্তি ও জনকল্যাণমুখী প্রকল্প সমূহের সাফল্য নির্ভরশীল। আর এজন্য এতে সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং পবিত্র হয়। যাকাত প্রদানের মাধ্যমে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভিত শক্ত ও মজবুত হয়। আর এইজন্য যাকাতকে অস্বীকার করা মানে আল্লাহকে ও তার রাসূলকে অস্বীকার করার শামিল। এজন্য আমরা প্রতিনিয়ত নির্দিষ্ট সময়েই যাকাত প্রদান করব। তাহলে আমরা যাকাত ফরজ হওয়ার সময় ও নিয়ম সম্পর্কে জানব এবং কোন কোন সম্পদের উপর যাকাত ফরজ সেগুলো নিয়ে এখন আলোচনা করব

১. স্বর্ণ-রুপার যাকাতঃ যদি কারোর নিকট 85 গ্রাম ৭.৫০ ভরি স্বর্ণ কিংবা ৫৮৫ গ্রাম রুপা থাকে তাহলে তার ওপর যাকাত প্রদান ফরজ

২. নগদ অর্থে যাকাতঃ অন্যান্য যাকাতের মত নগদ অর্থের ও যাকাত রয়েছে, নগদ অর্থ, টাকা পয়সা, ব্যাংকে জমা টাকা, পোস্টাল সেভিংস, বৈদেশিক মুদ্রা, কোম্পানির শেয়ার, মিউচুয়াল ট্রানজেকশন ফান্ড, ঋণপত্র বা ডিবেঞ্চার, ব্রন্ড, জমাকিত মালামাল, বীমা পলিসি, এছাড়া পেনশনের টাকা হাতে পেলে সেটির ও যাকাত দিতে হবে

৩. বৈদেশিক মুদ্রার উপর যাকাতঃ যাকাত প্রদানের সময় উপস্থিত হলে মালিকানাধীন সকল বৈদেশিক মুদ্রার নগদ ব্যাংক জমা টাকা, টিসি, ব্রন্ড সিকিউরিটি এটাতে জায়গার প্রদানকারী ব্যক্তির বসবাসের দেশের মুদ্রোবাজারের বিনিময়ে হারে মূল্য নির্ধারণ করে অন্যান্য যাকাতযোগ্য সম্পদের সাথে যোগ করে প্রদান করতে হয়।

৪. মোহরানার অর্থের ওপর যাকাতঃ মোহরানা ইসলামে নারীর জন্য এক অনন্য অধিকার নিশ্চিত করেছে। এজন্য কনে বরের সাথে তার বিবাহ বন্ধনে স্বীকৃতির সম্মতি স্বরূপ বরের কাছ থেকে মোহরানা পেয়ে থাকে। এজন্য মোহরানার মাত্রা নিসাব পরিমাণ হয়ে থাকলে অবশ্যই যাকাত প্রদান করতে হবে

৫. বাণিজ্যিক সম্পদের ওপর যাকাতঃ ব্যবসার নিয়তে পূর্ণঃবিক্রয়ের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ মুনাফা অর্জনের জন্য, আমদানি-রপ্তানি পণ্য, ট্রানজিট বা পরিবহন পণ্য, বিক্রয় প্রতিনিধির কাছে রাখা পণ্যদ্রব্য ও মজুদ মালামাল কে ব্যবসার পণ্য বলে থাকে। আর তাই ব্যবসার পণ্যের ওপর সর্বসম্মতভাবে যাকাত ফরজ

৬. স্থায়ী সম্পত্তির যাকাতঃ সম্পত্তি বলতে কেবল জমি, দালান কোঠা, প্রয়োজনে আসবাবপত্র, যন্ত্রপাতি, যানবাহন ইত্যাদি সকল কিছু বিষয়ের ওপর যাকাত প্রদান করা উচিত।

৭. ঋণদাতার উপর যাকাতঃ আদায়যোগ্য ঋণ আদায় হওয়ার পর অন্যান্য জাগত্রিত সম্পদের সাথে যোগ করে যাকাত প্রদান করতে হবে

আরো পড়ুনঃ কাজা নামাজের নিয়ম - কাযা নামাজের নিয়ত ২০২৩

৮. পশুর যাকাতঃ অন্যান্য যাকাতের মত পশুর যাকাত রয়েছে। এজন্য উটের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন নিসাব পাঁচটি, গরু-মহিষের জন্য ৩০ টি এবং ছাগল-ভেড়ার জন্য 40 টি। এক্ষেত্রে এ সকল পরশু বছরের অর্ধে করেই বেশি সময় মুক্তভাবে চারণভূমিতে ক্রান্তগ্রহণ করলেই এইসব পশুর সংখ্যা ভিত্তি ধার্য হয়।

৯. শস্য ও ফলের যাকাতঃ জমি থেকে উৎপন্ন সকল প্রকার শস্য যেমন-শাকসবজি, তরি তরকারি, ও ফলের ওপর যাকাত ফরজ। এছাড়া ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ করা হলে বন বৃক্ষ, ঘাস, ঔষধি বৃক্ষ, চা বাগান, তোলা, ফুল, আর্কিড ইত্যাদি যাকাত হবে।

এ থেকে আমরা পরিষ্কার বুঝতে পারি যাকাত ফরজ হওয়ার সময় ও নিয়ম। এবং যাকাত প্রদানের খাত কি কি। এজন্য সকল মুসলমানদের উচিত সঠিক সময়ে যাকাত প্রদান করা। তাহলে সম্পদ পরিশুদ্ধতা অর্জন করবে।

যাকাত দেওয়ার নিয়ম

নিসাব সম্পদের মালিক সকল মুসলিম নর-নারীর উপর যাকাত প্রদান করা ফরজ। কোন ব্যক্তি নিসা পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়ার পর চাঁদের হিসেবে কোন এক বছর অতিবাহিত হলে তার ওপর পূর্ববর্তী বছরের যাকাত প্রদান করা ফরজ। আর তাই জাগাত মানুষের মনে খোদ আবৃত্তি সৃষ্টি করে। পবিত্র অন্যতম দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে সাহায্য করে। অপচয় রোধ করতে শেখায়, যাকাত মানুষের আর্থিক প্রশান্তি, নৈতিক উন্নতি, সম্পদের পবিত্রতা ও পরিশুদ্ধতা নিশ্চিত করে থাকে।

যাকাত প্রসঙ্গে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-যখন তোমার নিকট 200 দিরহাম (সাড়ে ৫২ ভরি রুপা) জমা হয় এবং একটি বছর তার ওপর পূর্ণ হবে তখন তাতে পাঁচ দিরহাম যাকাত দিতে হবে। আর তোমাকে ততক্ষণ পর্যন্ত যাকাত দিতে হবে না যতক্ষণ না তোমার নিকট ২০ টি দিনার বা সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ জমা হওয়ার পর এক বছর পূর্ণ হবে। এতে তোমাকে দিতে হবে 40 ভাগের এক ভাগ আর এর অধিক হলে ওই অনুপাতের হিসাব করে যাকাত প্রদান করতে হবে।

এছাড়া যদি কারো জমাকৃত কোন সম্পদে এক বছর অতিবাহিত না হয় তাহলে তার ওপর যাকাত দেওয়া ফরজ নয়। এজন্য উচিত যাকাত ফরজ হওয়ার সময় ও নিয়ম সম্পর্কে সকলের অবগত থাকা। এজন্য যাকাত সঠিক সময়ে সঠিক নিয়মে প্রদান করলে সম্পদ বৃদ্ধি ও পবিত্র হয়। এখন আমরা জানব যাকাত না দেওয়ার ভয়াবহতা সম্পর্কে।

যাকাত অস্বীকারকারীর পরিণতি

যাকাত সম্পর্কে ইতিমধ্যেই আমরা জানতে পেরেছি যাকাত প্রদানের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে। এজন্য যারা যাকাত অস্বীকার করবে তাদের জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে। কারণ যাকাত প্রদানের মাধ্যমে গরিব এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবিকা নির্বাহ হয়।

যাকাত না দেওয়ার পরিণতি সম্পর্কে সহি মুসলিম একটি হাদিসে বর্ণিত রয়েছে

যায়েদ বিন আসলাম হতে বর্ণিত, আবু সালেহ যাকওয়ান তাকে সংবাদ দিয়েছিলেন যে, তিনি আবু হুরাইরা রা. রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বলতে শুনেছেন রাসুল সাঃ বলেছেন প্রত্যেক সোনা রুপার মালিক যে এর হক আদায় করে না কাল কিয়ামতের দিন তার জন্য গুনাহের বহু পাত বানানো হবে। অতঃপর সেগুলোকে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে এবং তার পাঁজর কপাল ও পিঠে ছেকা দেওয়া হবে। যখন তার ঠান্ডা হয়ে আসবে, পুনরায় গরম করে আবার একই রকম ভাবে শাস্তি প্রদান করা হবে। আর সেই দিন হবে 50,000 বছরের সমান। আর এই আজাব আজীবন চলতে থাকবে যতক্ষণ না বান্দাদের বিচার শেষ হবে।

জিজ্ঞেস করা হলো হে আল্লাহর রাসূল! উট সম্পর্কে কি হুকুম রয়েছে? অর্থাৎ কেউ যদি উটের যাকাত না দেয় তার কি হবে? তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু সালাম বলেন উটের মালিক যে তার যাকাত দিবে না আর তার হক সমূহ থেকে পানি পানের তারিখে তার দুধ দহন করা ও একটি হক। যখন কিয়ামতের দিন আসবে, নিশ্চয়ই সেদিন তাকে এক সমতল ধুধু ময়দানে উপর করে ফেলা হবে। আর তার উটের একটি বাচ্চাও সেদিন হারাবে না আর তাকে তাদের ক্ষুরধারা মারতে থাকবে এবং মুখ দ্বারা কামরাতে থাকবে। এভাবে যখন শেষ দল অতিক্রম করবে পুনরায় প্রথম দল এসে পৌঁছাবে এরো প করা হবে সেই দিন পর্যন্ত যতদিন মধ্যে ফয়সালার চূড়ান্ত না হবে। জান্নাতের দিকে না হয় জাহান্নামের দিকে।

এজন্য সকলের উচিত যাকাত ফরজ হওয়ার সময় ও নিয়ম মেনে যাকাত প্রদান করা। তাহলে পরকালীন জীবনে কঠিন আজাব থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। যাকাত প্রদানের মাধ্যমে গরিব অসহায় ফকির মিসকিনের হক অর্জন করা সম্ভব হয়।

যাকাত আদায় না করার শাস্তি

আমরা ইতিমধ্যেই যাকাত আদায়ের নিয়ম যাকাত ফরজ হওয়ার সময় ও নিয়ম, ও যাকাত অস্বীকারকারী পরিণতি সম্পর্কে জেনেছি এখন আমরা যাকাত আদায় না করার শাস্তি সম্পর্কে জানব-

হযরত আবু হুরায় রা. হতে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যাকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন অথচ সে তার যাকাত আদায় করেনি, কাল কেয়ামতের দিন তার জন্য তার সম্পদকে বিষধর সাপের রূপ ধারণ করানো হবে যার দুই চোখের ওপর দুটি কালো দাগ থাকবে। অতপর তার গলায় দেরি হয়ে তার মুখের দুদিক দিয়ে তাকে দংশন করতে থাকবে।

আরো পড়ুনঃ নামাজের বিবরণ - পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ঐতিহাসিক পটভূমি

উল্লিখিত বিষয়ে নবী সাঃ আরো বলেন-তোমাদের কারো কারো সংরক্ষিত মাল কিয়ামতের দিন বিষাক্ত সাপ হবে, তা থেকে তার মালিক পলায়ন করতে চাইবে কিন্তু উক্ত সাপ তাকে অনুসন্ধান করতে থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার নিজ আঙ্গুলসমূহ সাপের মুখে পুড়ে না দিবে। তাহলে ইতিমধ্যেই আমরা জানতে পারলাম যাকাত আদায় না করার শাস্তি কেমন। এজন্য আমাদের সকলের উচিত পরকালীন জীবনের সুখকর করতে যাকাত প্রদান করা। তাহলে পরকালীন সময়ে এমন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে না।

যাকাত অস্বীকারকারী বিরুদ্ধে যুদ্ধ

যাকাত প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর জন্য ফরজ করেছেন। এজন্য যাকাত ফরজ হওয়ার সময় ও নিয়ম মেনে যাকাত প্রদান করা। আবু হুরায় রা. হতে বর্ণিত যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করলেন তখনকার সময়ে আমাদের মাঝে দায়িত্বপ্রাপ্ত খলিফা ছিলেন আবু বকর রা. এবং সেই সময় আরবদের অনেকেই কাফের হয়ে হয়ে গেল। তখন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন আমরা কিভাবে মানুষের সাথে যুদ্ধ করব? অথচ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আমি মানুষের সাথে যুদ্ধের আদেশপ্রাপ্ত হয়েছি যতক্ষণ না তারা বলে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। যখন কেউ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলল তখন সে আমার থেকে তার জান মাল রক্ষা করল।

তবে ইসলামের অপরাপর বিধানের কারণে এবং তার হিসাব আল্লাহর ওপর। আবু বকর রা. বললেন আল্লহর কসম যে যাকাত এবং নামাজের মধ্যে পার্থক্য করবে নিশ্চয়ই আমি তার সাথে যুদ্ধ করব। কেননা যাকাত হচ্ছে সম্পদের হক। আল্লাহর শপথ তারা যদি ছাগলের একটি বাচ্চা আমাকে দিতে অস্বীকার করে যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রদান করত তবু আমি তা না দেওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। আর এ থেকে বোঝা যায় ইসলামে পাঁচটি স্তম্ভের তৃতীয় স্তম্ভ যাকাত কতটা গুরুত্বপূর্ণ ও ভারসাম্য।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url