ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করার দোয়া - ধন সম্পদ বৃদ্ধির আমল ২০২৩

প্রত্যেক মুমিনের উচিত কুরআন সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকা। প্রত্যেক মুসলিম উম্মাহ যেন আল্লাহতালা ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করার দোয়া শিখার তৌফিক এনায়েত করে। আর তাই কেউ যদি পূর্ণাঙ্গভাবে কোরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরে চলতে পারে তাহলে সে ঈমানী জীবন যাপন করতে সক্ষম হবে। আর তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করার দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।

ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করার দোয়া - ধন সম্পদ বৃদ্ধির আমল ২০২৩

অবশ্যই আপনাকে ধৈর্য সহকারে আমাদের এই আর্টিকেলটি করতে হবে। পৃথিবীর সব প্রাণীকে একদিন না একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে। মহান আল্লাহতালা মানুষকে সৃষ্টির সেরা আশরাফুল মাখলুকাত দান করেছেন। এবং মানুষ ও জিন জাতিকে মহান আল্লাহতালা সৃষ্টি করেছেন শুধুমাত্র তারাই এবাদতের জন্য।

ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করার দোয়া

পৃথিবীতে প্রত্যেকটা ঈমানদার ব্যক্তি মহান আল্লাহ তায়ালার অপার সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা ও গবেষণা করে থাকে। মুমিন বান্দাকে যাতে জাহান্নামে যেতে না হয় এবং জাহান্নামের সেই কঠিন আজাব থেকে মুক্তি পাই ও হাশরের ময়দানে লাঞ্ছিত হতে না হয় সেই জন্য মহান আল্লাহ তায়ালা কুরআনে একটি দোয়া নাযিল করেছেন। আর তা হল-

উচ্চারণঃ রাব্বানা মা খালাক্বতা হাজা বাত্বিলান, সুবহানাকা ফাক্বিনা আজাবান নার। রাব্বানা ইন্নাকা মান তুদ খিলিন নারা ফাক্বাদ আখঝাইতাহু ওয়ামা লিজজালিমিনা মিন আংছার। রাব্বানা ইন্নানা সামিনা মুনাদিয়াই ইউনাদি লিল ইমানী আন আমিনু বিরাব্বিকুম ফাআমান্না রাব্বানা ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া কাফফির আন্না সাইয়্যিআতিনা ওয়া তাকওয়াফফানা মাআল আবরার।

বাংলা অর্থঃ হে আমাদের প্রতিপালক! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি। আমাদেরকে তুমি জাহান্নামের শাস্তি থেকে বাঁচাও। হে আমার প্রতিপালক! নিশ্চয়ই তুমি যাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করো তাকে অপমানিত করো। আর জালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। হে আমার প্রভু! আমরা ঈমান আনার জন্য একজন আহবানকারীকে আহবান করতে শুনে ঈমান গ্রহণ করেছিলাম। হে আমাদের পালনকর্তা তুমি আমাদের সব গুনাহ থেকে মাফ করে দাও। আমাদের সব দোষ ত্রুটি দূর করে দাও। আর নেককার লোকদের সাথে আমাদের মৃত্যুদান করো।

পরিশেষে, মহান আল্লাহতালা যেন প্রকৃত ঈমানদার ব্যক্তিদেরকে অবশ্যই মৃত্যুর সময় সবাইকে ঈমানী মৃত্যু দান করেন। আর তাই আমাদের প্রত্যেক মুসলমান ব্যক্তির উচিত পবিত্র কোরআন ও নবী রাসূলের দেখানো পথ অনুসরণ করা এবং সৎ ও সত্যের পথে চলা। মহান আল্লাহতালা সবাইকে উল্লিখিত দোয়া পাঠের মাধ্যমে মৃত্যুর সময় ঈমান লাভ করার তৌফিক এনায়েত করো। একই সাথে আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আমলে নিজেদের জীবনকে সুন্দরভাবে আলোকিত করার তৌফিক দান করুন।

ধন সম্পদ বৃদ্ধির আমল

আল্লাহ তাআলা প্রত্যেকটা মুমিন ব্যক্তিকে পরীক্ষা করে থাকে। ঠিক যেমন করেছিলেন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ও আমাদের জাতির পিতা ইব্রাহিম কে। অনেকেই আছে আল্লাহ তায়ালার কাছে ধন সম্পদ বৃদ্ধির জন্য দোয়া চায় কিন্তু কিভাবে দোয়া করবে সে সম্পর্কে অবগত নয়। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব কিভাবে ধন সম্পদের বৃদ্ধির জন্য আমল ও দোয়া করতে হয়।

যদি কোন মুসলিম ব্যক্তির কাছে সদকা করার মতো কোনো সম্পদ না থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই সে যেন দুরুদ শরীফটি পড়ে নেয় আর এই দোয়াটি যাকাত সরুপ।

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন আবদিকা ওয়া রাসুলিকা ওয়া আলাল মুয়মিনিনা ওয়াল মুয়মিনাতি ওয়াল মুসলিমিনা ওয়াল মুসলিমাতি।

বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি রহমত বর্ষণ কর তোমার বান্দা ও রাসুল মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি সালামের উপর। এবং সব মুমিন নর-নারী ও মুসলমান নর নারীর ওপর।

উপর উপরোক্ত এই দোয়াটি পাঠের মাধ্যমে ধন-সম্পদ বৃদ্ধি এবং ধন-সম্পদ পবিত্র হয়। আর সকল সম্পদশালী ব্যক্তির যথাযথ যাকাত প্রদানের মাধ্যমেও ধন-সম্পদ বৃদ্ধি হয়ে থাকে।

রিজিক বৃদ্ধির আমল

বাংলা অর্থঃ আল্লাহতালা নিজের বান্দাদের প্রতি মেহেরবান। তিনি যাকে ইচ্ছা রিজিক দান করেন। তিনি প্রবল পরাক্রমশালী। আর এই আমল যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে পবিত্রতার সঙ্গে 70 বার পাঠ করবে সে সর্বদা রিজিকের সংকট থেকে হেফাজতে থাকবে।

যানবাহনে চলার দোয়া

আমরা আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে বিভিন্ন স্থানে যেতে হয়। বাসা থেকে বাহিরে বাহিরে থেকে বাসাতে যানবাহনের মাধ্যমে চলাচল করে থাকি। অনেক সময় যানবাহনে চলার সময়ে নানা ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। আর তাই আমরা যেন যানবাহনে চলার সময় এমন কোন দুর্ঘটনার কবলে না পড়ে সেই জন্য নিম্নোক্ত দোয়াটি অবশ্যই পাঠ করতে হবে এবং উপস্থিত করতে হবে।

উচ্চারণঃ সুবহানাল্লাজি সাখখারা লানা হা-জা ওয়ামা কুননা লাহু মুক্বরিনীন, ওয়া ইন্না ইলা রাব্বিনা লামুনক্বালিবুন।

বাংলা অর্থঃ মহান পবিত্র তিনি, যিনি আমাদের জন্য এটাকে অধিক নিয়ন্ত্রিত বানিয়ে দিয়েছেন, নয়তোবা আমরা তো এটাকে বশ করতে সক্ষম ছিলাম না। একদিন আমাদেরকে আমাদের প্রভুর নিকট অবশ্যই ফিরে যেতে হবে।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে তিনি সাওয়ারিতে বসার সময় উপরোক্ত দোয়াটি পাঠ করতেন। উপরোক্ত দোয়া পশু ও যান্ত্রিক সকল যানবাহনের ক্ষেত্রে গণ্য। তাই মুমিনের উচিত সফরের সময় পরকালীন কঠিন সফরের মৃত্যুর কথা স্মরণ করা। যানবাহনে ওঠার পূর্বে অবশ্যই বিসমিল্লাহ বলে পা রাখতে হবে। এবং যানবাহনে ওঠার পর স্থির হয়ে বসার পরে আরামদায়ক ভাবে অবশ্যই আলহামদুলিল্লাহ বলে তারপর আরোহণের দোয়াটি পাঠ করা।

স্ত্রী সহবাসের দোয়া

মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র বিবাহের মাধ্যমে নারী পুরুষ উভয়ের মধ্যে যৌন চাহিদা পূরণ করে থাকে এবং বংশবৃদ্ধিকে কল্যাণের কাজে পরিণত করে। বিবাহের ফলে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে যাবতীয় বৈধ কার্যক্রম শুরু হয় এছাড়াও বিয়ের মাধ্যমে সকল কল্যাণ ও সওয়াবের কাজ সুসংঘটিত হয়। আর বংশবৃদ্ধির জন্য একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে সহবাস করা। কিন্তু অনেকেই সহবাসের জন্য যে দোয়া রয়েছে সেটি জানেনা এবং পারে না আর তাই আপনাদের জন্য স্ত্রী সহবাসের দোয়া উপস্থাপন করা হলো। আমরা ইতিপূর্বেই ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করার দোয়া সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা পরবর্তী দোয়া সমূহ গুলো জানব-

উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবিশ শায়ত্বানা মা রাযক্বতানা।

বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ! তোমার নামে আরম্ভ করছি তুমি আমাদের নিকট হতে শয়তানকে দূরে রাখো। আমাদের এই মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবে তা হতেও শয়তানকে দূরে রাখো।

হযরত আলী রা বলেন, যে ব্যক্তি সহবাসের ইচ্ছে করে তার নিয়াত যেন এমন হওয়া উচিত যে আমি ব্যভিচার থেকে দূরে থাকবো। আমার মন এদিক ওদিক ছুটে বেড়াবে না আর জন্ম নেবে নেকার ও সৎ সন্তান। এই নিয়েতে সহবাস করলে তাতে অধিক সওয়াব এবং একই সাথে নেক উদ্দেশ্য পূরণ হয়।

স্ত্রী সহবাসের নিয়ম

  • স্বামী স্ত্রী উভয়ে পাক পবিত্র থাকতে হবে
  • বিসমিল্লাহ বলে সহবাস করা মুস্তাহাব
  •  সহবাসের পূর্বে সুগন্ধি ব্যবহার করা উত্তম যা আল্লাহর রাসূলের সুন্নত
  • কেবলামুখী হয়ে সহবাস করা থেকে বিরত থাকতে হবে
  • এবং একেবারে উলঙ্গ না থাকা
  • স্ত্রীর হায়েজ-নেফাসের সময় সহবাস না করা
  • স্ত্রীকে পরিপূর্ণ তৃপ্তি দেওয়ার পূর্বে বিচ্ছিন্ন না হওয়া
  • বিদেশে বা সফরে যাওয়ার পূর্বের রাতে স্ত্রী সহবাস না করা।
  • সহবাসের সময় স্ত্রীর সাথে বেশি কথোপকথর না করা
  • ভরা পেটে স্ত্রী সহবাস পরিহার করা
  • উল্টোভাবে স্ত্রীর সহবাস করা থেকে বিরত থাকতে হবে
  • স্বপ্ন দোষের পর গোসল না করে কখনো স্ত্রী সহবাস করা যাবে না

পাঠকের শেষ কথা / ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করার দোয়া

প্রতিটার ঈমানদার ব্যক্তি চাই ঈমানী মৃত্যু। এজন্য অবশ্যই আমাদের আল্লাহর পথে অবিচল থাকতে হবে। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বিভিন্ন আয়াত নাযিল করেছে আর তার সবকিছুই আল্লাহর বান্দার জন্য। তাই উপরোক্ত নিয়মাবলী মেনে চললে অবশ্যই আল্লাহ তা'আলা ঈমানী মৃত্যুবরণ করা তৌফিক দান করবে। আজকের এই পোস্টটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনার প্রিয়জনদের কাছে বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন এতক্ষণ পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url