সহজেই পাসপোর্ট করার উপায় - অনলাইনে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম 2023

 বিদেশে ভ্রমণ করতে প্রথমেই যে জিনিসটা লাগে সেটি হল পাসপোর্ট। আর এই পাসপোর্ট কিভাবে তৈরি করতে হয় তা অনেকের কাছেই জটিল মনে হয়। আর তাই সহজেই পাসপোর্ট করার উপায় এবং দালাল ছাড়া নিজেই পাসপোর্ট তৈরি করুন তার সকল দিক তুলে ধরব। আমাদের দেশে পাসপোর্ট চালুর কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত সেটি চালু হয়নি তাই এম আর পি পাসপোর্ট এই সবার জন্য গ্রহণযোগ্য।

সহজেই পাসপোর্ট করার উপায় - দালাল ছাড়া নিজেই পাসপোর্ট করুন ২০২৩

সহজেই পাসপোর্ট করার উপায় হিসেবে কয়েকটি ধাপ রয়েছে এবং সকল ধাপ অতিক্রম করার পরেই পাসপোর্ট তৈরি করা সম্ভব হয়। পাসপোর্ট তৈরি করার প্রথম কাজ বা প্রথম ধাপ হল পাসপোর্ট এর ফি জমা দেওয়া। তাহলে আর দেরি না করে চলুন সহজেই পাসপোর্ট করার উপায় সম্পর্কে এ আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নিই।

দালাল ছাড়া নিজেই পাসপোর্ট করুন

আমাদের সবার মধ্যে এমন একটি ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে দালাল ছাড়া বা টাকা খাওয়ানো ছাড়া পাসপোর্ট কি কখনো করা সম্ভব তবে হ্যাঁ এটাই সত্য যে আপনি দালাল ছাড়াও নিজে কোন রকম হয়রানির শিকার না হয়ে পাসপোর্ট করতে পারবেন। ইতিপূর্বে আমারও পাসপোর্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে এমন ধারণা ছিল কিন্তু যখন নিজে থেকে অফিসে গিয়ে সকল কার্যক্রম শেষ করেছি তখন বুঝতে পেরেছি কোন রকম দালাল ছাড়াই পাসপোর্ট তৈরি করা সম্ভব।

বর্তমান সময়ে পাসপোর্ট তৈরি করা খুব সহজ একটি ব্যাপার। এর জন্য আপনাকে অবশ্যই সঠিক জায়গায় যেতে হবে। সঠিক রাস্তায় হাঁটলে খুব কম সময়ে কম খরচে পাসপোর্ট তৈরি করতে পারবেন তাহলে কেন শুধু শুধু দালালদের পিছনে টাকা খরচ করে পাসপোর্ট তৈরি করবেন। এই জন্য বর্তমান সময়ে দালাল ছাড়া নিজেই পাসপোর্ট তৈরি করুন এখন আমরা জানবো পাসপোর্ট তৈরি করতে কি কি লাগে।

পাসপোর্ট কি

পাসপোর্ট হল এক ধরনের ভ্রমণের নথি। আর এটি একটি দেশের জন্য সরকার কর্তৃক জারি করা হয়। আর এই পাসপোর্ট একজন নাগরিকের নাম, জন্মতারিখ, ছবি, স্বাক্ষর, দেশের নাম, অন্যান্য তথ্য উল্লেখ থাকে। আর এই জন্য এই পাসপোর্ট এর মাধ্যমে একজন নাগরিকের আইডেন্টিফাই করা হয়। আর এই জন্য যখন কোন নাগরিক এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণ করে তখন তাকে অবশ্যই পাসপোর্ট করতে হয়। আর এই পাসপোর্টই একজন নাগরিকের পরিচয় বহন করে।

পাসপোর্ট এর প্রকারভেদ

যুগে যুগে পাসপোর্টের নানা রকম ভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু এখনকার সময়ে ও একই রয়ে গিয়েছে। পাসপোর্ট মূলত একটি ছোট আকারের বই যাতে করে আপনার দেশের এবং আপনার নিজের সম্পর্কে সকল তথ্য দেওয়া থাকে।

পাসপোর্ট প্রধানত তিন ধরনের হয়ে থাকে

১. হাতে লেখা পাসপোর্ট

২. এমআরপি পাসপোর্ট

৩. ই- পাসপোর্ট

ই-পাসপোর্ট কি

সহজে পাসপোর্ট করার উপায় হিসেবে ই-পাসপোর্ট হলো অন্যতম। ই-পাসপোর্ট মূলত ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর সিপ যুক্ত বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট। মূলত তিন ধরনের ছবি সংগ্রহ করে থাকে, এছাড়াও চোখের আইরিশ স্ক্যান বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। বর্তমান সময়ে বিশ্বের ১২০টি দেশে এই ই-পাসপোর্ট চালু রয়েছে। এবং ই-পাসপোর্ট সর্বত্র ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে জালিয়াতি ও দুর্নীতি অনেকটাই কমে যাবে।

বর্তমান সময়ে এমআরপি বা যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট এর মতই ই পাসপোর্ট এর বয়স একই রকম থাকে। তবে উল্লেখ্য যে যন্ত্রে পাসপোর্ট এর বইয়ের প্রথমে যে তথ্য সংবলিত দুটি পাতা থাকে ই-পাসপোর্ট এর মাধ্যমে সেটি থাকে না। কিন্তু সেখানে পালিমানের তৈরি করা একটি কার্ড ও এন্টেনা থাকে। এছাড়াও ডাটাবেজ থাকবে এবং পাসপোর্টধারীর তিন ধরনের ছবি, চোখের আইরিশ, এবং ১০আঙুলের ছাপ থাকবে। আর এই উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে যেকোনো দেশের কর্তৃপক্ষ সহজে ভ্রমণকারীর সম্পর্কে সফল তথ্য সহজে পেয়ে যাবে।

ই-পাসপোর্ট এর সুবিধা

ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করার মাধ্যমে বিভিন্ন বিমানবন্দরে পাসপোর্টধারীদের ভিসা চেকিং এর জন্য দাঁড়াতে হয় না। এবং এর পাশাপাশি ফিঙ্গারপ্রিন্ট দ্বারা যাচাইয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে। সব ঠিক থাকলে পাসপোর্ট ধারি ইমিগ্রেশন পেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু উল্লেখিত প্রক্রিয়ার কোন কিছু যদি গরমিল দেখতে পায় তাহলে সেখানকার দায়িত্বরত কর্মকর্তারা উক্ত ব্যক্তিকে তার তথ্য যাচাই করতে পারে।

এবং কারো ভ্রমণে যদি নিষেধাজ্ঞা থাকে তাহলে সেটিও এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সহজে যারা সম্ভব। ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন পাবলিক কি ডাইরেক্টরি পরিচালনা করে থাকে। আর তাই ইন্টারপোল সহ বিমান ও স্থলবন্দর এসব তথ্য ই-পাসপোর্ট এর মাধ্যমে সহজেই সত্যতা যাচাই করা সম্ভব। জাল তৈরি করা অত্যন্ত কঠিন।

ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

ই-পাসপোর্ট তৈরি করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো হল-

১. ই-পাসপোর্ট আবেদনের প্রিন্ট কপি

২. পাসপোর্ট সাইজের ছবি দুই কপি

৩. জাতীয় পরিচয় বা জন্ম সনদের ফটোকপি

৪. শিক্ষাগত সনদ

৫. অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর প্রিন্টকপি

৬. আগের যদি পাসপোর্ট থাকে তাহলে তার ডাটা পেইজ এর ফটোকপি

৭. আপনার পেশাগত সনদের সত্যায়িত ফটোকপি যদি থেকে থাকে

৮. এবং সবশেষে নাগরিক সনদপত্র

অনলাইনে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম

অনলাইনে ই-পাসপোর্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে www.epassport.gov.bd এই লিংকের মাধ্যমে প্রবেশ করে তারপর এপ্লাই অনলাইন মেনুতে প্রবেশ করে আঞ্চলিক অফিস ও থানা নির্বাচন করতে হবে। এরপরে আপনাকে একটি ইমেইল দিতে হবে, তারপর মোবাইল নাম্বার দিয়ে সাইন আপ করতে হবে এবং সর্বশেষ নির্দেশাবলী পালন করে আপনাকে সকল তথ্য দিতে হবে।

পাসপোর্ট ফি জমা দেওয়ার নিয়ম

পৃথিবীতে প্রতিটা ব্যক্তিকে পাসপোর্ট এর জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ ফ্রি পরিশোধ করতে হয়। পাসপোর্ট এর ধরন অনুযায়ী ফি কম বেশি করে থাকে। আপনারা চাইলে যে যেমনভাবে ইচ্ছা তেমনভাবে কি পরিশোধ করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপঃ ব্যাংক পেমেন্ট এর মাধ্যম গুলো হল-ওয়ান ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, এশিয়া, এছাড়া ঢাকা ব্যাংক ফ্রি প্রদান করা হয়। এরপরে সকল প্রসেসিং কমপ্লিট হওয়ার পরে ডেলিভারি রশিদ নিতে পারবেন। এর জন্য সকল কিছু সম্পূর্ণ হওয়ার পর স্লিপ দিয়ে আপনার আঞ্চলিক অফিস থেকে পাসপোর্ট নিতে পারবেন।

মেয়াদ ও পৃষ্ঠা ভেদে পাসপোর্ট ফি এর পরিমাণ

৫ বছর মেয়াদী ৬৪ পেজ-

  • রেগুলার পাসপোর্ট ফি- ৫৭৫০ টাকা
  • আর্জেন্ট পাসপোর্ট ফি- ৮৬২৫ টাকা

১০ বছর মেয়াদী ৪৮ পেজ-

  • রেগুলার পাসপোর্ট ফি- ৫৭৫০ টাকা
  • আর্জেন্ট পাসপোর্ট ফি- ৮০৫০ টাকা

১০ বছর মেয়াদী ৬৪ পেজ-

  • রেগুলার পাসপোর্ট ফি- ৮০৫০টাকা
  • আর্জেন্ট পাসপোর্ট ফি- ১০৩৫০ টাকা

পুলিশ ভেরিফিকেশন কি

পুলিশ ভেরিফিকেশন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একজন বাংলাদেশী নাগরিকের দাপ্তরিক ক্ষেত্রে সকল তথ্য যাচাই করাকে বোঝায়। জীবনের প্রতিটি ধাপেই একজন নাগরিকের বিভিন্ন জায়গায় নিজের সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেওয়া উচিত। আর তাই অনেক সময় সে সকল তথ্য যে পুরোপুরি সত্য নির্ভুল এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের এটি নিশ্চয়তা প্রয়োজন। আর সেই সকল নিশ্চয়তা প্রদান করে থাকে বাংলাদেশ পুলিশ। আর এই পুলিশ প্রশাসন কর্তৃক আপনার সকল তথ্য নিশ্চিত হওয়া ও আপনার সামাজিক অবস্থান নির্ণয় করা পূর্বের ইতিহাস যাচাই করাকেই পুলিশ ভেরিফিকেশন বলে।

পুলিশ ভেরিফিকেশন বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। তার মধ্যে অন্যতম হলো সরকারি চাকরি, পাসপোর্ট, লাইসেন্স ইত্যাদি। বাংলাদেশের নাগরিকদের ভেরিফিকেশন করার অন্যতম কারণ হলো পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে হলে নিজের সকল তথ্য নিশ্চিত ও যাচাই-বাছাই করার জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন করে। সরকারি চাকরিপ্রাপ্ত কিংবা আধা সরকারি ও সাহিত্য শাসিত চাকরির ক্ষেত্রেও সাধারণভাবে পুলিশ ভেরিফিকেশন করে থাকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url