বিবাহের ৫টি উপকারিতা - বিবাহের প্রকৃত বয়স কত জেনে নিন

 

ইসলামের শরিয়া মোতাবেক প্রতিটি মানুষের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া উত্তম। আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা বিবাহের ফজিলত কি? আপনি কি বিবাহের ফজিলত সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই ধৈর্য সহকারে আজকের আর্টিকেলটি পড়ুন। বিবাহ হল একটি সামাজিক বন্ধন বা বৈধ মাধ্যম যেখানে দুজন মানুষের মধ্যে দাম্পত্য হালাল সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

বিবাহের ফজিলত - বিবাহের প্রকৃত বয়স কত জেনে নিন

বিবাহের ফজিলত সম্পর্কে অবশ্যই অবিবাহিতদের জানা উচিত। সাধারণত বিবাহের মাধ্যমে দুজন মানুষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ও যৌন সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর এজন্য বিবাহ হলো বৈশ্বিক সর্বজনীন সাংস্কৃতিক অংশ। তাহলে আর দেরি না করে চলুন বিবাহের ফজিলত এবং বিবাহের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে জেনে নিই।

পোস্ট সূচিপত্রঃ বিবাহের ফজিলত - বিবাহের প্রকৃত বয়স কত জেনে নিন

বিবাহ কি

বিবাহ হলো দুটি মানুষের পরস্পর মিলন বন্ধন যায় দুজন মানুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর সামাজিক সম্পর্ক এবং যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিবাহ সাধারণত কোন রাষ্ট্র, কোন সংস্থা, কোন ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ, এছাড়া কোন আদিবাসী গোষ্ঠী এমনকি স্থানীয় সম্প্রদায় অথবা দলগত ব্যক্তিবর্গের দ্বারা স্বীকৃত হতে পারে। ইসলামী শরীয়া মোতাবেক সাধারণত আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ আচার এবং অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিবাহ কাজ সম্পন্ন করা হয়ে থাকে।

আর এই বিবাহর মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমাজ স্বীকৃত বা আইনগত দায়িত্ববোধ সৃষ্টি হয় এবং এর মাধ্যমে তারা বৈধভাবে স্বেচ্ছায় সন্তান-সন্ততি জন্ম দিতে পারে। বিবাহ কেবল যৌন চাহিদা পূরণের জন্যই নয় বিবাহের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি হয়। বিশ্বের অনেক অমুসলিম দেশে পরিবার পরিকল্পিত বিবাহ, শিশু বিবাহ, বহুবিবাহ, এ ছাড়া জোরপূর্বক বিবাহ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে পালন করে থাকে। কিন্তু এখনকার সময়ে আন্তর্জাতিক আইন এবং নারী অধিকার বিষয়ক উদ্যোগের কারণে বিশ্বে বিভিন্ন জায়গাতে এ সকল বিবাহ গুলোর মধ্যে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে আইনের আওতাভুক্ত করা হচ্ছে।

আরো পড়ুনঃ ইসলামে নারীর মর্যাদা - ইসলামে নারীর পর্দা ও বিধানসমূহ

বিবাহের মাধ্যমে পুরুষকে স্বামী হিসেবে এবং নারীকে স্ত্রী হিসেবে স্থান দেওয়া হয়। আর এই জন্য স্বামী ও স্ত্রী যুক্ত দাম্পত্য জীবনকে সুখময় জীবন হিসেবে অভিহিত করা হয়। বিবাহ যদিও একটি ধর্মীয় বিধান হলেও এখন বিবাহ আধুনিক সভ্যতায় এটি আইনি প্রথা হিসেবেও ধরা হয়। আর এই বিবাহের মাধ্যমে জেনা ব্যভিচার থেকে মুক্তি পাই। আর এই জন্য বিবাহ বহির্ভূত যৌনসঙ্গম অবৈধ হওয়ার কারণে বিবাহ একটি বৈধ পন্থা। তাহলে আমরা জানতে পারলাম এ বিবাহের ফজিলত কি এবং বিবাহ কি

যে ১০ কারণে বিবাহ করবেন

দাম্পত্য জীবন সুখময় করতে যেমন বিবাহ প্রয়োজন ঠিক তেমনি পরবর্তী জীবন অতিবাহিত করার জন্য বিবাহ প্রয়োজন। আর তাই বিবাহর যেমন সুবিধে রয়েছে তেমনি কিছু অসুবিধা রয়েছে তবে বিশেষ করে সুবিধার সংখ্যায় বেশি। আপনি যে ১০ কারণে বিবাহ করবেন সেই দিক নিয়ে আলোচনা করব কেননা বিবাহের পর দাম্পত্য জীবন দুজনের বোঝাপড়া যদি সুখকর হয় তাহলে ওই সকল দম্পতি আর্থিক সুবিধা, মানসিক শান্তি, এবং ভালো স্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে তুলতে সক্ষম। এই সকল দম্পতির গর্ভে যে সকল সন্তান ভূমিষ্ঠ হবে সে সব সন্তানরা সুখী এবং মানসিকভাবে স্বাস্থ্যসম্মত হবে।

বিবাহের দশটি উপকারিতা সম্পর্কে অবশ্যই আপনাকে অবগত থাকতে হবে কেননা ইসলামী পরিভাষায় একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের জন্য বিবাহ বৈধ করেছে। তাহলে চলুন যে ১০ কারণে বিবাহ করবেন সেসকল বিষয় সম্পর্কে জানি।

দীর্ঘজীবনের জন্য বিয়ে

সম্প্রীতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে অল্প বয়সে মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে অবিবাহিতদের সংখ্যা বিবাহিতদের চাইতে দ্বিগুণ। আর এর জন্য স্বামী-স্ত্রীরা প্রয়োজন হলে একে অপরের খুব ভালো যত্ন নিতে পারে। যার ফলে বিবাহিতরা নিজেদের যত্ন নেওয়ার জন্য দম্পতির প্রতি দায়িত্ববোধ ও বাচ্চা নেওয়ার কথা ভেবে থাকে। আর তাই কেউ দীর্ঘজীবী হতে চাইলে তাকে বিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছে অভিভাবকরা।

নিজের খেয়াল ও দেখাশোনার করার জন্য বিয়ে

বিবাহিত নারী পুরুষ স্বাস্থ্যবান হলে পরবর্তী প্রজন্ম স্বাস্থ্যবান হবে। আর তাই দম্পতিরা তাদের প্রিয় তোমার প্রতি দায়িত্ব অনুভাব করে খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করে এবং নিজের সর্বোচ্চ যত্ন নেওয়ার শুরু করে যা তাকে স্বাস্থ্যবান এবং দীর্ঘজীবী হওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কার্য করে ভূমিকা পালন করে। অনেক ক্ষেত্রে দাম্পত্য জীবনে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হলে সেটা দাম্পত্য জীবন ধ্বংসের দিকে যায়। আর তাই বিবাহ জীবনকে উপভোগ করা সঙ্গীকে ভালোবাসার সর্বোপরি ভালোবাসায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা এবং নিজের দেখাশোনার জন্য বিবাহ করা প্রয়োজন।

আরো পড়ুনঃ নামাজ শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানুন

যৌন জীবনে রোগের ঝুঁকি কমায়

যেসব দম্পতি একে অপরকে ভালোবাসে এবং বিশ্বাস করে কেবল তারাই প্রতিনিয়ত জনশক্তি উপভোগ করে থাকে। যার ফলে তাদের জনসংঘের খোঁজার প্রয়োজন পড়ে না এতে তাদের জনজীবনের বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমিয়ে থাকে।

ভালো স্বাস্থ্য

বিয়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্যগত অনেক সুবিধা পেয়ে থাকে বিবাহিত দম্পতিরা। তবে নারীরা এই সুবিধা বেশি ভোগ করে থাকে কেননা ভালো যৌন জীবন তাদের সন্তুষ্টি ও সুখের একটি সম্পূর্ণ অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। আর তাই এ সকল সাময় িক মানসিক অবস্থা শারীরিক স্বাস্থ্যের চেয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।

স্বাস্থ্য ও সমস্যার সমাধান

কেবল নারীরাই নয় বিবাহিত নারী পুরুষ উভয়ে মানুষকে এবং আবেগঘতভাবে ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারে

আর্থিক অবস্থার সমৃদ্ধি

অবিবাহিত ব্যক্তিরা বিবাহিত জীবনের তুলনায় টাকা কম খরচ করে থাকে এটা যেমন সত্য ঠিক তেমনি বিবাহিত দম্পতিরা একত্রে অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারে এবং তাদের আর্থিক অবস্থা অনেক সমৃদ্ধ হয়ে থাকে।

খারাপ খাদ্যভাস ত্যাগে বিয়ে

গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে বিবাহিতরা তাদের পরিবার সেবন থেকে সহজেই মুক্তি পেয়ে থাকে। এর মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা তাদের দম্পত্ত জীবন সুখময় এবং সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ধূমপানের মত খারাপ অভ্যাস ছেড়ে দেয়।

বিয়ের মাধ্যমে সন্তানদের যত্ন নেওয়া সহজ হয়

কেউ যদি একা না হয় বরং তাদের যদি জীবনসঙ্গী থাকে তাহলে তাদের বাড়ন্ত শিশুদের যত্ন নেওয়ার জন্য বেশি কষ্ট করতে হয় না। তাই স্বামী স্ত্রী উভয় শিশুদের দায়িত্ব ভাগাভাগি করে বিধায় তাদের সন্তানদের সুস্বাস্থ্য কামনা এবং ইতিবাচক প্রভাব তৈরি হয়।

পরিপূরক জীবন ব্যবস্থা

বিয়ের পর থেকে যেহেতু একটি দম্পতির অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা বাড়ে ঠিক তেমনি জীবনযাত্রার মান উন্নতি ঘটে। যার ফলে একটি সুন্দর স্থানে রুচিশীল বাড়ি বা এপার্টমেন্ট তৈরি করতে সক্ষম হয়।

আজীবন সহচর্য

সম্পর্কের ক্ষেত্রে কারো সঙ্গে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া একটি মহৎ কাজ। কারণ বর্তমান সময়ে কারো কাছ থেকে যত্ন ও বিপদে সাহায্য গ্রহণ করা পুরস্কার পাওয়ার মত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর এটি শুধু কেবল বিয়ে করার মাধ্যমে তা পেয়ে থাকে।

ইসলামী বিবাহ রীতি

ধর্মে বিবাহের মাধ্যমে নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যকার যৌন সম্পর্কের বৈধ অনুমতি রয়েছে। আর ইসলামের বিবাহ রীতিতে পাত্র-পাত্রী উভয়ের সম্মতিক্রমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় যা সারা জীবন অটুট থাকে। ইসলামের পরিভাষায় যৌতুকের কোন স্থান নেই। কিন্তু এখনকার সময়ে পাত্রের পক্ষ হতে কণের পক্ষ থেকে বিপুল পরিমাণে যৌতুক নিয়ে থাকে। ইসলামের শরিয়া মোতাবেক বিবাহের ফজিলত সম্পর্কে জানলে কখনো কেউ যৌতুকের মত ঘৃণিত কাজ করতো না।

ইসলামে বিয়ের পূর্বে পাত্রের পক্ষ হতে পাত্রীকে উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা বা অর্থ-সম্পদ দেওয়া বাধ্যতামূলক এবং এটি অবশ্যই পালনীয় একে ইসলামী পরিভাষায় দেনমোহর বলে। ইসলামী বিধান অনুযায়ী একজন পুরুষের জন্য চারটি বিয়ে করার বিধান রয়েছে যদি সে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী এবং সকল স্ত্রীর প্রতি সমান অধিকার দিতে পারে। আর যদি সবার প্রতি সমান অধিকার কার্যকর না করতে পারে তাহলে একটি বিয়ে করায় উচিত। কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে একাধিক বিয়ে করার অনুমতি নেই। এছাড়া ইসলামে একজন মুসলিম একজন অমুসলিমকে বিয়ে করতে পারে যদি উক্ত অমুসলিম আল্লাহর প্রতি ঈমান এনে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে।

বিবাহের ফজিলত

ইতিপূর্বেই আমরা বিবাহ সম্পর্কে অনেক কিছুই অবগত হয়েছি এবং এখন আমরা বিবাহের ফজিলত সম্পর্কে জানব। একই সাথে জানবো বিবাহ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে? আল্লাহতালা প্রত্যেক নবী-রাসুলকে প্রেরণ করেছেন এবং তারা বিবাহ করেছেন। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যখন কোন বান্দা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তখন সে ধর্মের অর্ধাংশকে পূরণ করে নেয়। এবং অবশিষ্ট অর্ধেক যেন আল্লাহকে ভয় করে কাটিয়ে দেয়।

উপরোক্ত হাদিস থেকে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বিয়ে-কে দিনের অর্ধেক করেছেন। এর কারণ হলো একজন মুমিনের মনে রয়েছে মৌলিকভাবে দুটি বিষয়। এবং এই দুটি বিষয়ই হল যথা ঃ ১. লজ্জাস্থান ২. পেট। এক্ষেত্রে বিবাহর ফজিলতি হিসেবে বিবাহের মাধ্যমে লজ্জাস্থানের হেফাজত করা যায়। এবং হারাম থেকে বিরত থাকলে পুরো দিনদ্বারে হেফাজত হয়।

আরো পড়ুনঃ নামাজের বিবরণ - পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ঐতিহাসিক পটভূমি

মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ অন্য এক হাদিসে বলেন-তোমরা বিবাহ করো কেননা বিবাহ এক হাজার বছরের নফল ইবাদত অপেক্ষা বেশি উত্তম। এ হাদিস থেকে আমরা খুব সহজেই বুঝতে পারলাম বিবাহের ফজিলত কি এবং বিবাহ একজন প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম পুরুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ।

বিবাহের ৫টি উপকারিতা

আপনি যদি অবিবাহিত এবং প্রাপ্তবয়স্ক হন এবং প্রতিনিয়ত নানা রকম স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন তাহলে সহজ সমাধান হলো সময় মতো বিয়ে করে নেওয়া। তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আর এই জন্য নারী পুরুষ উভয়ের জন্য দাম্পত্য জীবন সুখময় করতে বিয়ে করা। আর তাই সুখী দাম্পত্য জীবন আপনার মন ভালো রাখে, বিষন্নতা দূর করে, একই সাথে বিরক্তি কমিয়ে দেয়। তাহলে আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই বিবাহের ৫টি উপকারিতা সম্পর্কে-

১. আয়ু বৃদ্ধি পায়ঃ বিবাহিত দাম্পত্য জীবন অবিবাহিতর চাইতে বেশিদিন বাঁচে

২. শরীর সুস্থ রাখেঃ বিবাহিত দম্পতির জীবনে সর্দি, কাশি, মাইগ্রেন এর মত অসুখ কম হয়। এছাড়াও বিবাহিতদের শরীরে ক্যান্সার হার্টের অসুখ এবং হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে

৩. মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করেঃ বিবাহিত দম্পতিরা নানা সময় নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হয় এবং এই সকল সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য তারা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে থাকে তাই তাদের মানসিক স্বাস্থ্য অবিবাহিতদের তুলনায় বেশি ভালো থাকে।

৪. হার্ট ভালো রাখেঃ বিগত গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে অবিবাহিতদের চেয়ে বিবাহিত ব্যক্তিদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এমনকি বিবাহিতদের হার্ট অ্যাটাক হলেও তা অবিবাহিত তুলনায় দ্রুত ভালো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

৫. অসুস্থতা দ্রুত ভালো করেঃ বিবাহিত দম্পতিরা অবিবাহিতদের তুলনায় যে কোন রোগে আক্রান্ত হলে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। তবে অবশ্যই বিবাহ করার পূর্বে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ে ধার্মিক কিনা সে বিষয়ে জেনে নিতে হবে কারণ আল্লাহতালা বলেন-তোমরা মুশরিক মেয়েদের বিয়ে করো না যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে, অবশ্যই একজন ঈমানদার মেয়ে মুশফিক মেয়ে চেয়ে অতি উত্তম। যদিও সে তোমাদেরকে মোহিত করে তোমরা মুশরিক পুরুষদের বিয়ে করা থেকে বিরত থাকো যতক্ষণ না তারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনছে। আর এই জন্য নিশ্চয়ই একজন ঈমানদার পুরুষ মুশরিক পুরুষের চেয়ে অতি উত্তম

বিবাহের প্রকৃত বয়স কত

বিবাহ অপরিবার এমন একটি সামাজিক ব্যাপার যার জন্য শুধু মানসিকভাবে প্রস্তুতি থাকলেই চলবে না প্রাকৃতিকভাবে শরীরকে ও গঠনগত প্রস্তুত করতে হবে। আপনি কি বিবাহের প্রকৃত বয়স কত সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? ইসলামী শরীয়া মোতাবেক কত বছর বয়সে বিবাহ করা উত্তম তার সকল কিছু নিয়ে আলোচনা করব-বিজ্ঞানী ভাষায় ১৮ বছর বয়স হলে একজন মানুষ শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়। আর এক্ষেত্রে এই বয়সকে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স হিসেবে ধরা হয়।

ইতিপূর্বেই আমরা বিবাহ ফজিলত সম্পর্কে অবগত হয়েছি এবং এখন আমরা বাংলাদেশের পুরুষদের বিয়ের বয়স সম্পর্কে জানব। আমাদের বাংলাদেশ কমপক্ষে ২১ বছর বয়সি পুরুষ এবং ১৮ বছর বয়সে নারীর বিয়ে উপযুক্ত সময় হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু এই বেধে দেওয়ার কম বয়সে বিয়ে দেওয়াকে বাল্যবিবাহ বলে গণ্য করা হয়। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে কেউ আঠারো বছরের আগেই সাবালক হয়ে বিয়ে করতে সক্ষম আবার অন্যদিকে ২৫ বছর বয়সেও মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে পারছে না।

আরো পড়ুনঃ আল্লাহর ৯৯ নামের ফজিলত ও আমল

অনেক মেয়ের ক্ষেত্রে ১৮ বছর হওয়ার আগ পর্যন্ত মেয়েদের ইউটেরাস, অভারি, পেলভিস পরিপক্ক হতে পারে না। যার ফলে এই সময়ের মধ্যে বিয়ে হলে সন্তান নেওয়ার সময় মেয়েদের নানা ধরনের জটিল সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। ছেলেদের ক্ষেত্রেও একই বিষয় পরিলক্ষিত হয় যে 21 বছর না হওয়া পর্যন্ত তাদের অর্গানগুলো সম্পূর্ণরূপে পরিপক্ক হয় না এজন্য সবাইকে পরিপূর্ণ শারীরিক গঠন এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে করা থেকে বিরত থাকতে হবে। নিম্নোক্ত কিছু দেশের আইনি মতে বিবাহের সময় দেওয়া হল

  • বাংলাদেশঃ ছেলের বয়স ২১ / মেয়ের বয়স ১৮
  • ভারতঃ ছেলের বয়স ২১ / মেয়ের বয়স ১৮
  • ক্যামেরুনঃ ছেলের বয়স ১৫ / মেয়ের বয়স ১৮
  • পাকিস্তানঃ ছেলের বয়স ১৮ / মেয়ের বয়স ১৬
  • যুক্তরাষ্ট্রঃ ছেলের বয়স ১৮ /মেয়ের বয়স ১৮
  • চীনঃ ছেলের বয়স ২২ / মেয়ের বয়স 20
  • বেলজিয়ামঃ ছেলের বয়স ১৮ / মেয়ের বয়স ১৮
  • কানাডাঃ ছেলের বয়স ১৮ /মেয়ের বয়স ১৯
  • মেক্সিকোঃ ছেলের বয়স ১৮ /মেয়ের বয়স ১৮

সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিয়ের গুরুত্ব

আমরা জানি মানুষ সামাজিক জীব। বিজ্ঞানী অ্যারিস্টোটল বলেছেন যে মানুষ মাত্রই সামাজিক জীব যে সমাজে বসবাস করে না সে হয় পশু আর নয়তো দেবতা। মানুষ কখনোই একা থাকতে পারে না। একসাথে থাকার যাত্রা শুরু হয় কেবলমাত্র বিয়ের দ্বারা। বিয়ের মাধ্যমে দুটি মানুষ একসাথে তাদের জীবন অতিবাহিত করতে পারে এবং একে অপরের সাথে সকল আবেগ অনুভূতি দুঃখ কষ্ট মিলিয়ে চলতে পারে। এবং এই সামাজিক ধারাবাহিকতার ফলে দাম্পত্য জীবন সুখকর এবং প্রেম প্রীতি ভালবাসা গড়ে ওঠে আর সেখান থেকেই সন্তান-সন্তত্বে জন্ম লাভ করে। এজন্য বলা যায় যে মানব জীবনে বংশ রক্ষার ধারা হলো বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া। আর এইজন্য বিএফ একজন অসম্পূর্ণ মানুষকে সম্পন্ন পরিপূর্ণতা দান করে।

বিবাহের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

অনেকেই আছেন যাদের পরিবারের ছেলের বয়স ২৩ কিন্তু বিয়ে দিচ্ছেনা কারণ তাদের ধারণা ছেলে এখনো ছোট। কিন্তু পরিবারের অভিভাবকদের কাছে সন্তানরা সবসময় ছোটই থাকে। কিন্তু সে নিজেই জানে না সে আসলে কতটা বড় হয়ে গেছে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় সন্তানরা লজ্জার বসে বাবা-মাকে বিয়ের কথা বলতে পারেনা। এইজন্য অভিভাবকদের উচিত নিজে থেকে জেনে নেওয়া।

বিবাহ করার ফলে প্রশান্তি লাভ করা সম্ভব। কুদৃষ্টি থেকে আল্লাহতালা বাঁচিয়ে রাখে। লজ্জা স্থানকে হেফাজতে রাখে। এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেন-বিবাহ দৃষ্টিকে খুব বেশি অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে সংযত রাখে। বিবাহর মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেওয়া এবং বংশবৃদ্ধি করা সম্ভব। তাকওয়া ও পরহেজগারী বজায় রাখা যায়।

বিয়ে না করলে কি গুনাহ হবে

বিয়ে না করলে কি গুনাহ হবে? তার উত্তর বলতে গেলে কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যা ব্যক্তির অবস্থানের সাথে জড়িত। আর এই জন্য কখনো কখনো সেটা হয় কারো জন্য বিয়ের সুন্নত, কারো জন্য ওয়াজিব, নফল, কিংবা মাখরুহ বা হারাম হতে পারে। কেবলমাত্র বিয়ে করা ওয়াজিব হবে সেই ব্যক্তির যিনি শারীরিক এবং আর্থিক সামর্থ্য আছে এবং সে বিয়ে না করলে তার দ্বারা ফিতনা বা ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এমন সময় তার জন্য বিয়ে করা ফরজ বা ওয়াজিব বলে গণ্য হবে।

এছাড়া ওই সকল ব্যক্তির জন্য বিয়ে করা সুন্নত হতে পারে যার শারীরিক এবং আর্থিক সামর্থ্য আছে কিন্তু তার অবস্থা এমন যে বিয়ে না করলে তার এমন আশঙ্কা নেই বা তিনি কোন ফিতনা বা হারাম কাজে লিপ্ত হবেন। আর এই ধরনের ব্যক্তির জন্য বিয়ে করা অবশ্যই মুস্তাহাব সুন্নত।

উপসংহার

এতক্ষণ আমরা বিবাহের ফজিলত, বিবাহের প্রকৃত বয়স, ইসলামে বিবাহর বিধান এবং বিবাহের উপকারিতা এ সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছি। তাই আমরা যারা অবিবাহিত রয়েছি তাদের উচিত আল্লাহ ওয়ালা ঈমানী নারী ও পুরুষ জীবন সঙ্গী হিসেবে বেছে নেওয়া। যথাসময়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া, কেননা বিবাহ জেনা ব্যভিচারের মত জঘন্য পাপ থেকে মুক্তি দেয়। আজকের পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানান এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি বিষয়ক পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url