তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা - তরমুজ খাওয়ার অপকারিতা ২০২৩

প্রিয় পাঠক আপনি কি তরমুজ খেতে ভালোবাসেন। আপনি কি জানেন তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা কি? তরমুজ খেতে কার না ভালো লাগে। তরমুজ একটি সুমিষ্টি পানীয় ফল। সবুজ মোটা খোসাযুক্ত গোল বৃত্তে আবৃত ভেতরে লাল টকটকে রসালো ফল হলো তরমুজ। আজ আমি আপনাদেরকে তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।

তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা - তরমুজ খাওয়ার অপকারিতা ২০২৩

তরমুজ হল গ্রীষ্মকালীন ফল যদিও এখন বাংলাদেশের প্রায় সব মৌসুমে তরমুজ কম বেশি চাষ করা হয়ে থাকে। যদিও তরমুজ গ্রীষ্মকালীন ফল চৈত্র মাসের প্রখর রোদ্রের তাপে মানুষের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে তখন তরমুজের জুড়ি মেলা ভার। তরমুজের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে।

পোস্ট সূচীপত্রঃ তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা - তরমুজ খাওয়ার অপকারিতা ২০২৩

তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা

প্রতিটা মানুষ এই রসালো ফল খেতে ভালোবাসে। তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন তেমনি রয়েছে মিনারেল, অ্যামাইনো এসিড, অ্যান্টিঅক্সিজেন এর মত নানা প্রকার কার্যকারী উপাদান, তরমুজে যেসব ভিটামিন রয়েছে তা হলোঃ ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এবং জিংক। তরমুজ খাওয়ার ফলে শরীরের প্রয়োজনীয় উপাদানের ঘাটতি পূরণ করে।

তবে প্রথম তরমুজ চাষ বা আদি নিবাস হলো আফ্রিকাতে পরবর্তী সময়ে গোটা বিশ্বজুড়ে এর ব্যাপক চাষাবাদ শুরু হয়। যে সকল রোগীদের কিডনির সমস্যা সে সকল রোগী তরমুজের জুস করে খেতে পারবে। শরীরে উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তারা নিয়মিত তরমুজ খেতে পারবে এতে করে শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে। তরমুজ খাওয়ার ফলে কিডনি স্টোন কেও প্রতিরোধ করে।

আরো পড়ুনঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

তরমুজ খাওয়ার ফলে শরীরে ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও তরমুজ খাওয়ার ফলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি খুব সহজে কমে যায়। যাদের শরীরে জ্বর, সর্দি, ঠান্ডা ও কাশি হয় তারা যদি তরমুজ খায় তাহলে এইসব রোগ থেকে সহজে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। গর্ভবতী মহিলাদের জন্যতাহলে আমরা জানতে পারলাম তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা কি

তরমুজ খাওয়ার নিয়ম

তরমুজ কে না পছন্দ করে। আমরা সকলেই তরমুজ খেতে ভালবাসি কিন্তু আমরা এটা জানি না যে তরমুজ খাওয়ার নিয়ম কি এবং কিভাবে তরমুজ খেলে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তীব্র গরমে মানুষ বেশি তরমুজ খেয়ে থাকে কারণ তরমুজ মানুষের শরীরকে সতেজ রাখে।

তবে তরমুজ বেশি খেলে বা ভুল সময় খাওয়ার ফলে শরীরে উপকারের চেয়ে ক্ষতি হতে পারে। তরমুজ শরীরকে ঠান্ডা রাখে এটা ভেবে অনেকেই রাতের বেলা তরমুজ খেয়ে বিপদ ডেকে আনে কারণ আমরা অনেকেই জানি যে, তরমুজ সহজেই হজম হয় না। তাই যারা ভুলবশত রাতে খায় তাদের শরীরে এরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম হতে পারে বা সকালে পেট খারাপ বা ডায়রিয়া হতে পারে। কারণ রাতে সকলের শরীরের পরিপ্রাকক্রিয়া অত্যন্ত ধীরগতিতে চলে। তাই রাতে তরমুজ না খাওয়াই ভালো। এছাড়াও তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ন্যাচারাল সুগার বিদ্যমান তাই রাতে তরমুজ খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।

আসুন আমরা তরমুজ খাওয়ার নিয়ম ও সঠিক সময় জেনে নিই, আমরা সবাই দিনের আলো থাকতে থাকতে তরমুজ খেয়ে নিব, কারণ দিনের আলো থাকতে থাকতে তরমুজ খেলে সহজেই হজম হয়। আর সেজন্য সবার উচিত রাতের বেলা তরমুজ খাওয়া থেকে বিরত থাকা।

মিষ্টি ও লাল তরমুজ চেনার উপায়

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি রয়েছে, কারণ গ্রীষ্মকালীন সময়ে বাজারে অনেক তরমুজ পাওয়া যায়। তবে বেশিরভাগ মানুষ রসালো ও মিষ্টি তরমুজ চিনতে পারেনা। অনেকেই তরমুজ কিনতে গিয়ে ঠকে যায়। দেখে শুনে কেনার পর বাসায় নিয়ে এসে কেটে দেখা যায় ফ্যাকাশেও মিষ্টি কম। তাই আজ আমি আপনাদেরকে মিষ্টি ও লাল তরমুজ চেনার উপায় সম্পর্কে জানাবো চলুন জেনে নেওয়া যাক।

আরো পড়ুনঃ উন্নত জাতের মরিচ চাষ পদ্ধতি - কাঁচা মরিচের ‍উপকারিতা

প্রথমে আপনি তরমুজে হাতে নিয়ে দেখবেন তরমুজ ওজনে ভারী আছে কিনা যদি দেখেন ভারী তাহলে আপনি সেই তরমুজটি নিতে পারেন কারণ পাকা তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে। তরমুজের উজ্জ্বল রং দেখে বোকা হবেন না কারণ মিষ্টি ও পাকা তরমুজ সাধারণত গাঢ় কালচে রঙের হয়। অনেক সময় দেখা যায় তরমুজ দীর্ঘদিন মাটির ওপরে থাকে, এবং মাটিতে থাকা অংশটি ও হলদে রং ধারণ করে। কেনার সময় অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যে তরমুজের গায়ে বড় আকারের হলদে রং আছে কিনা যদি থেকে থাকে তাহলে বুঝতে হবে তরমুজটি পরিপূর্ণ পাক আর পরে জমি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

তরমুজ খাওয়ার অপকারিতা

গ্রীষ্মকাল এখন চলে এসেছে। গ্রীষ্মকাল মানেই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া। গরমের দিনগুলোতে শরীরকে সতেজ রাখার জন্য প্রচুর পানি পান করতে হয়। তা না হলে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। এজন্য গরমের সময় প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাবার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

গ্রীষ্মকাল চলে আসার সাথে সাথে বাজারে তরমুজের ছড়াছড়ি। তরমুজে রয়েছে 92 শতাংশ জলীয় উপাদান যার শরীরে প্রয়োজনীয় পানির চাহিদা পূরণ করে থাকে। ফাইবার সমৃদ্ধ তরমুজে আরো থাকে ভিটামিন এ, বি৬, সি এবং খনিজ উপাদান যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ তৈরি করে। এছাড়াও তরমুজে শর্করা বেশি থাকে। এজন্য অতিরিক্ত তরমুজ খেলে শরীরে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায় যার ফলে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর ডায়াবেটিস আরো বেশি মাত্রায় বেড়ে যেতে পারে।

আরো পড়ুনঃ কিভাবে আপনার উইন্ডোজ ১১ Product Key খুঁজে পাবেন

তরমুজ খাওয়া যেমন উপকারী ঠিক তেমনি তরমুজ খাওয়ার অপকারিতা ও রয়েছে। তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তরমুজ বেশি খেলে ডায়রিয়াসহ পেটের নানা রোগে ভুগতে পারে। এতে থাকা সরবিটল নামক উপাদান রয়েছে। অম্বলসহ বদহজমের মত নানা সমস্যা বাড়ায়। তরমুজের রং গাঢ় উজ্জ্বল হয় কারণ এতে আছে লাইকোপিন নামক রাসায়নিক। আর এই লাইকোপিন এক প্রকার এন্টিঅক্সিজেন যা প্রয়োজন এর তুলনায় শরীরে বেশি পরিমাণে প্রবেশ করলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।

এছাড়াও তরমুজে অতিরিক্ত পানি থাকার কারণে বেশি পরিমাণে খেলে ওভার হাইড্রেশন হয়ে যেতে পারে। যার ফলে কিডনিতে অনেক সময় সমস্যা দেখা দিতে পারে। পুষ্টিবিদদের মতে প্রতি 100 গ্রাম তরমুজে ক্যালরির পরিমাণ প্রায় ৬ গ্রাম। দিনে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত তরমুজ হজম করা সম্ভব হয়ে থাকে। আর তাই প্রয়োজনের অধিক তরমুজ খেলে সেটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

সর্বশেষ কথা হল আজ আমরা জানতে পারলাম তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা কি, তরমুজ খাওয়ার নিয়ম, তরমুজ চেনার উপায়, ও তরমুজ খাওয়ার কিছু ক্ষতিকর দিকসমূহ। প্রিয় পাঠক এমন নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন এবং আপনার মতামত আমাদেরকে জানান এবং আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url